ভারত থেকে পেঁয়াজ এখনও দেশে আসেনি। আমদানি হয়নি অন্য দেশ থেকেও। এরইমধ্যে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে অর্ধেকে নেমেছে।
ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে সোমবার দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রবিবার ছিল কেজি ৪৫-৫০ টাকা। তবে রমজান শুরুর দিন ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সাতদিন পর এসে দাম ৪০ টাকায় নেমেছে।
চোরাইপথে আসা ভারতীয় পেঁয়াজ সোমবার পাইকারিতে ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রমজান শুরুর আগে এই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল কেজি ১২৫ টাকায়। এখন সেই পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমেছে।
ব্যবসায়ীদের অনেকে বলেন, রমজান সামনে রেখে এতদিন যারা কৃষকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনে মজুত করে রেখেছিলেন, তারা বাজার পড়ার শঙ্কায় ছেড়ে দিচ্ছেন। আর আরও দাম কমবে এই আশায় বাজারে ক্রেতা কমেছে।
তবে পাইকারি বাজারে কমলেও খুচরা দোকানে এর প্রভাব একেবারেই নেই। সোমবার চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ী খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ১১০ টাকায়। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ১২৫ টাকায়। তবে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়িতে জিইসি মোড়ে ৭০ টাকা ও আন্দরকিল্লা মোড়ে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হঠাৎ করে কেন পেঁয়াজের দাম কমল—তার সঠিক কোনও জবাব দেয়নি আড়তদাররা। সবারই অনেকটা গৎবাঁধা কথা।
তারা বলেন, রমজান শুরুর আগে থেকেই একটু একটু করে দাম কমছিল। সেটা কেজিপ্রতি ৫ টাকা করে। রবিবার, সোমবার সেই পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকার নিচে নেমেছে। সোমবার সেটি আরও কমে ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম কম হলেও ক্রেতা নেই।
দাম কমার কারণ জানতে চাইলে আড়তদার মোহাম্মদ ইদ্রিস সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, রমজানের আগে যে চাহিদা ছিল, সেই চাহিদা তো এখন আর নেই। তাছাড়া দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে দাম কমাতে বাধ্য ক্রেতারা।
কিন্তু দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ হঠাৎ কেন বাড়ল- তা তিনি জানাতে পারেননি।
তবে হিলি, ভোমরা সীমান্তের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ৩১ মার্চের পর পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে। এরপর থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা শুরু হতে পারে। আর ভারতে এখন পেঁয়াজের দাম কম, কেজি ৭-১৫ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। ফলে পেঁয়াজ রপ্তানি শুরু হবে- এই বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই আমদানিকারকরা নতুন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বা আইপি নিচ্ছেন সরকারের কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংগনিরোধ থেকে।
চট্টগ্রামের এক আমদানিকারক বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে- এমন বিষয় মুখে মুখে প্রচার হওয়ার পর মজুতদাররা দেশি পেঁয়াজ ছেড়ে দিচ্ছেন বাজারে। রমজান ঘিরে এতদিন তারা কৃষকদের কাছ থেকে কিনে মজুত করে রেখেছিলেন।
দেশের বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে খ্যাত পাবনার সুজানগর ও সাঁথিয়ার পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ব্যাপক দরপতন ঘটেছে বলে খবর মিলেছে। পাঁচ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমেছে। পাঁচদিন আগে পেঁয়াজের মণ ছিল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। রবিবার বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়।