Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

ভারাক্রান্ত সুন্দরবনকে চেপে ধরছে পর্যটন

সুন্দরবন ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এমন সব রিসোর্ট।
সুন্দরবন ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এমন সব রিসোর্ট।
[publishpress_authors_box]

বিশ্ব ব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গড়ে প্রতিবছর সুন্দরবনের আড়াই বর্গ কিলোমিটার এলাকা হারিয়ে যাচ্ছে। সুন্দরবনের জন্য ১০টি হুমকি চার বছর আগে চিহ্নিত করেছিল জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো। তার সঙ্গে এখন নতুন হুমকি হিসেবে আসছে পর্যটন।

বাংলাদেশে পর্যটনের প্রসারের সঙ্গে সুন্দরবনের ভেতরে নানা ধরনের রিসোর্ট, কটেজ গড়ে উঠছে। মানুষ ঘুরতে যাচ্ছে। তবে সেটা সুন্দরবনেরই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “অনেকেই বলেছেন ইকোসিস্টেম মেনেই এসব রিসোর্ট, কটেজ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আদতে সেটা হচ্ছে না, ইকোসিস্টেমের নাম করে তারা যা করছেন, সেটা ইকোর বারোটা বাজাচ্ছে, এটা মূল ট্যুরিজমের চাইতেও খারাপ।”

পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক আবু নাসের মোহসিন হোসেনও তর কথায় সায় দেন।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “রিসোর্ট, কটেজ নতুন থ্রেট সুন্দরবনের জন্য। এমনকি এসব রিসোর্টে আসা টুরিস্টরা হরিণের মাংসও খেতে চান, যেগুলো মেইনটেইন, কন্ট্রোল করা ভীষণ কঠিন।”

বন বিভাগ জানাচ্ছে, বর্তমানে সুন্দরবনে সাতটি পর্যটন এলাকা আছে। এগুলো হলো করমজল, হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলার চর, হিরণ পয়েন্ট ও কলাগাছিয়া।

এসব জায়গায় বেশি ভিড় হয় বলে ২০২১ সালে নতুন করে আরও চারটি পর্যটন এলাকা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের আওতায় ভৌত অবকাঠামোর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, এগুলোকেই বন বিভাগ ‘ইকোট্যুরিজম’ বলছে। এর বাইরে বেসরকারি উদ্যোগেও গড়ে উঠছে রিসোর্ট-কটেজ।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে কাজ করে যাওয়া চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান মনে করেন, বনের জন্য ক্ষতিকর সব স্থাপনা ধ্বংস করে দেওয়া উচিৎ।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে সুন্দরবনকে অধিকতর সুরক্ষা প্রদান করা অবশ্য প্রয়োজন হলেও উল্টো সুন্দরবনের সন্নিকটে একের পর এক প্রতিবেশ বিধ্বংসী অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে, যা কিনা প্রাকৃতিক রক্ষাকবচকে স্থায়ীভাবে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা আত্মঘাতী কর্মকাণ্ড।”

বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্ধা, চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক এবং খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কালাবগীতে চলছে ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র তৈরির কার্যক্রম। এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে পায়ে হাঁটার রাস্তা (ফুট-ট্রেইল), ওয়াচ টাওয়ার ও শৌচাগার। চলছে আরও কিছু স্থাপনার কাজ। কয়েকটিতে দেওয়া হয়েছে পর্যটক প্রবেশের অনুমতি।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারি পর্যটন কেন্দ্রের জন্য কেটে ফেলা হয়েছে কয়েক প্রজাতির গাছ।

ইকোট্যুরিজমের জন্য গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে তিনি অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “গাছ কাটা হয়নি। আমাদের যে ক্যাম্প ও স্টেশনগুলো রয়েছে, সেখানেই কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে।”

বাগেরহাটের সাংবাদিক ইনজামামুল হক মনে করেন, বনের একটা এলাকায় একসঙ্গে কত পর্যটক ঢুকতে পারবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া প্রয়োজন।

“কারণ দেখা যাচ্ছে, একই সাথে বনের মধ্য কয়েকশ টুরিস্ট জাহাজ ঢোকে। শব্দ দূষণ, প্লাস্টিক দূষণ, বর্জ্য দূষণের মতো সব ঘটনাই ঘটাচ্ছে।”

সুন্দরবনে ঢোকা অন্তত তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা উচিৎ বলে মনে করেন বাগেরহাটের কর্মরত চিকিৎসক মোশাররফ হোসেন মুক্ত।

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা তৈরির প্রয়াসে পরিবেশবাদীদের উদ্যোগে ২০০১ সাল থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।

গবেষকরা বলছেন, সুন্দরবন বাঁচাতে হলে এর অস্তিত্বের জন্য হুমকি দূর করতে হবে। নয়ত বাঁচবে না জলোচ্ছ্বাস, ঝড় থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা সুন্দরবন।

অধ্যাপক হারুন বলেন, “আমাদের প্রতিবাদ করার জায়গা নেই, তাই আমি অনুরোধ করছি, নিয়ম মেনে, সবকিছু জেনে বুঝে সুন্দরবনের ক্ষতি করে এটা আপনারা করবেন না, আমাদের একটাই সুন্দরবন, একে নষ্ট করা মানে দেশের ক্ষতি করা।”

সূত্র : চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ।

আরও যত হুমকি

পরিবেশবিদরা বলছেন, ভাঙাগড়ার মধ্যে আয়তনে ছোট হয়ে আসার পাশাপাশি আশেপাশে নানা শিল্প স্থাপনা তৈরি, জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যপ্রাণী শিকার, দূষণ, বিষ দিয়ে মাছ ধরা, অনিয়ন্ত্রিতভাবে গাছকাটা সুন্দরবনকে হুমকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে।

জাতিসংঘের রামসার কনভেনশন অনুযায়ী সুন্দরবন আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি জলাভূমি। এই কনভেনশনে ১৯৭২ সালে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। যার ফলে কনভেনশনের শর্ত অনুযায়ী সুন্দরবনের ক্ষতি হতে পারে, এমন কোনও তৎপরতা বাংলাদেশ চালাতে পারে না। কিন্তু গত কয়েকবছরে এই বনের আশেপাশে নানা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ভূমি অধিগ্রহণ ও মানুষের অবাধ বিচরণ ঘটছে।

বনের চারপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকাকে ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা করা হলেও বাস্তবচিত্র পুরোই বিপরীত। এখানে কমেছে গাছ, মাছ ও অন্যান্য প্রাণী।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, “অপরিকল্পিত ও পরিবেশের তোয়াক্কা না করে যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে ‘বাংলাদেশের দেয়াল’ সুন্দরবন নষ্ট করছি আমরা নিজ হাতে।”

লবণাক্ততা পরিমাপে সুন্দরবনের চারপাশকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। বেশি লবণাক্ত, মাঝারি লবণাক্ত এবং কম লবণাক্তপ্রবণ এলাকা। প্রথম ভাগে রয়েছে সাতক্ষীরা, মাঝে খুলনা ও মোংলা, কম লবণাক্ত বাগেরহাট।

লবণাক্ত পানির উপর নির্ভর করে গাছের ইকোসিস্টেম তৈরি হয় জানিয়ে অধ্যাপক হারুন বলেন, “যখন জোয়ারের লবণাক্ত পানি যাচ্ছে বনের ভেতরে, তখন লবণ কম সহ্য করতে পারা সুন্দরবনের প্রধান গাছ সুন্দরী, পশুর, ধুন্দুলের মতো গাছ কমে যাচ্ছে।

“লবণের কারণে চারা গাছ থেকে গাছ বড় হচ্ছে না, বীজ নষ্ট হচ্ছে, অঙ্কেুরোদগম হচ্ছে না। পাখিরাও মাইগ্রেট করেছে, খাবারের অভাবে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। এসব জায়গায় চরে বেড়ানো কাঁকড়া, পাখি, ক্ষুদ্রপ্রাণি কমছে আশঙ্কাজনকভাবে।”

বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, সুন্দরবনে রয়েছে প্রায় ৫০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৫০ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩২০ প্রজাতির পাখি, আট প্রজাতির উভচর প্রাণী,৪০০ প্রজাতির গাছ, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিড। বাঘ, হরিণ, কুমির, কিং কোবরা, বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন, ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও ২১০ প্রজাতির মৎস্য সম্পদ।

অধ্যাপক হারুন বলেন, “কয়েক বছর আগে সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্টে নদী খনন হয়েছিল, সেখান থেকে বালু তুলে ভেতরে ফেলা হয়েছিল। আমরা তখন দেখেছি, কীভাবে ভেতরের সব গাছ, নদী মরে যাচ্ছে।”

গত কয়েক বছরে সুন্দরবনের খাল, শাখা খালগুলোতে বিষ দিয়ে ধরা হচ্ছে মাছ। কম সময়ে বেশি মুনাফার আশায় এটা করছেন কিছু জেলে।

এতে বনের সামুদ্রিক জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে। মাছের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণীও বাঁচতে পারছে না এখানে। বিষের কারণে মাছের পোনা মারা যাচ্ছে।

অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, বিষের প্রভাবে জলজ প্রাণীদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

বিষা্ক্ত পানি পানে বাঘ, হরিণসহ অন্য প্রাণীর অসুস্থ হওয়ার খবরও পাচ্ছেন তিনি।

চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, “বিশ্বব্যাপী জলবায়ু ও পরিবেশগত বিপর্যয় রোধে প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা ও তার ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদান করা হলেও বিষ প্রয়োগে নির্বিচারে মাছ ও জলজ প্রাণী নির্মূলের পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিত কাঠ পাচার চলছে।

“মাছ কমছে, গাছ কমছে, কাঁকড়া কমছে, অন্য ক্ষুদ্র প্রাণী কমছে। সুন্দরবনের হুমকি দৃশ্যমান, অথচ প্রতিকার-প্রতিরোধ নেই।”

সুন্দরবনের আরেক বড় হুমকির কারণ মোংলা বন্দর। বন্দরগামী নৌযানগুলো চলাচল করে বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া পশুর নদী দিয়ে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, “নদী, শাখা নদীতে প্রতিদিন অন্তত ২০০ থেকে ২৫০ কার্গো, ট্রলার যাতায়াত করছে। খুলনা, সাতক্ষীরা থেকে সিমেন্ট পরিবহন এবং সরাসরি বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন শুরু করেছে ভারত। এটাও পুরো সুন্দরবনের জন্য বড় ভয়।”

ঝুঁকিতে সুন্দরবনকেন্দ্রিক প্রান্তিক জনগোষ্ঠী

অধ্যাপক হারুন বলেন, উপকূলের প্রান্তিক মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস এ বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এই সুন্দরবনকে ঘিরে কোনও না কোনওভাবে প্রায় দেড় লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

“কিন্তু মাছ, গাছ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ার কারণে এই প্রান্তিক মানুষগুলোও জীবিকার উৎস হারিয়েছে। যার কারণে তাদের মধ্যে অপরাধও বেড়েছে। এসব মানুষরা যদি তাদের কাজ হারায়, তাহলে অপরাধ বাড়বে, সংঘর্ষ বাড়বে। যেটা একেবারেই কাম্য হতে পারে না।”

বাগেরহাটের সাংবাদিক ইনজামামুল হক বনবিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনলেন।

তিনি বলেন, “অভিযোগ আছে, বন বিভাগকে ম্যানেজ করে কিছু প্রভাবশালী অভয়ারণ্য এলাকাতেও মাছ শিকার করে। বন বিভাগের কাছে জিম্মি, এমন অভিযোগও আছে জেলেদের।”

হরিণসহ বন্যপ্রাণী নিধন থামানো যায়নি এখনও। বন সুরক্ষায় স্থানীয় ও বনজীবীদের কার্যকর সম্পৃক্ততাও নিশ্চিত হয়নি।

খুলনার সর্বদক্ষিণের উপজেলা কয়রা। অবস্থানগত কারণেই কয়রার শতকরা ৯০ শতাংশ মানুষ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু তারা বর্তমানে নানা সংকটে দিন পার করছেন।

ইনজামামুল হক বলেন, “সুন্দরবন সুরক্ষায় নানা প্রকল্প, আর উদ্যোগ নিতে গিয়ে প্রান্তিক স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। অনেকেই এরই মধ্যে পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছেন। বছরের বড় একটি সময় কাজ থাকে না বনের উপর নির্ভরশীলদের।”

সুন্দরবনের আশেপাশের গ্রামগুলোর পুরুষেরা সুন্দরবনে মাছ ধরা, গোলপাতা কাটা, কাঁকড়া ধরা ও মধু আহরণের কাজ করেন। আর নারী ও শিশুরা কাঠ সংগ্রহ, চিংড়িসহ নানা মাছের পোনা ধরার কাজ করেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম সুন্দরবনের এ মানুষগুলো এভাবেই বেঁচে আছেন, কিন্তু বর্তমানে নানা সংকটে তারা বিপর্যস্ত।

বন থেকে মাছ, মধু বা গোলপাতা আহরণের জন্য অনুমতি নিতে হয় বন বিভাগের। বছরের বড় একটি সময় বন সম্পদ সংগ্রহে থাকে নিষেধাজ্ঞা। আবার বেড়েছে বনের অভয়ারণ্য এলাকা। এতে বনজীবীদের মাছ ধরার জায়গা কমে গেছে।

স্থানীয়ভাবে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় অনেকেই এলাকা ছাড়ছেন কাজের জন্য, বলছিলেন সাংবাদিক ইনজামামুল।

সুন্দরবনের অভয়ারণ্য ২০১৮ সালে ছিল ২৩ শতাংশ, যেটা বেড়ে হয়েছে এখন ৫২ শতাংশ। এই অভয়ারণ্যে ‘হিউম্যান ডিস্টার্ব’ নিষিদ্ধ। আর সেটা না হওয়ায় বাঘ, বিভিন্ন ধরনের হরিণ, সজারু, গুইসাপসহ অন্য প্রাণীর প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে পরিচালনা করা হয়। 

এক নজরে সুন্দরবন

>> ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটারজুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশে, বাকিটা ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। বাংলাদেশের ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ১ হাজার ৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে নদী, খাল-বিল।

>> ২০২০ সালে বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯০৪-২৪ সালে সুন্দরবনের আয়তন ছিল ১১ হাজার ৯০৪ বর্গকিলোমিটার, ১৯৬৭ সালে তা কমে হয় ১১ হাজার ৬৬৩ বর্গকিলোমিটার। ২০২১ সালে আয়তন কমে দাঁড়ায় ১১ হাজার ৫০৬ বর্গকিলোমিটারে। অর্থাৎ গত ১০০ বছরে সুন্দরবনের আয়তন ৪৫১ বর্গকিলোমিটার কমে গেছে। এর অর্থ, প্রতিবছর আড়াই বর্গকিলোমিটারের মতো বন হারিয়ে যাচ্ছে। এই পরিমাণ জমির আয়তন ৩৫০টি ফুটবল মাঠের সমান।

>> বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সুন্দরবনে ৫২৮ প্রজাতির বৃক্ষ ও লতাগুল্ম আছে। আছে ৩০০ প্রজাতির পাখি, ৫৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী এবং নয় প্রজাতির উভচর প্রাণী।

>> সুন্দরবনের খাল-বিলে আছে ২৫০ প্রজাতির মাছ। আছে বহু প্রজাতির কীটপতঙ্গ, কাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক। আছে নানা ধরনের ছত্রাক, শ্যাওলা।

>> ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সুন্দরবন। বনের মোট আয়তনের ৫২ ভাগ এখন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অংশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত