Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনের ফল গণনা নিয়ে হট্টগোল

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের পাহারায় দেখা যায়। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের পাহারায় দেখা যায়। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের ভোট নির্বিঘ্নে হলেও গণনা নিয়ে হট্টগোল ও মারামারি হয়েছে। এতে একজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলসহ অন্তত সাতজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

হট্টগোলের মধ্যে ভোট গণনা ছাড়াই সম্পাদক পদে নাহিদ সুলতানা যুথীকে বিজয়ী ঘোষণা করে ভোটকেন্দ্র ছাড়েন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।

শুক্রবার ভোররাতে এসব ঘটনা ঘটে। এদিন সকাল ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায় নীরবতা। কয়েকজন সাংবাদিক ছাড়া কোনও দলের প্রার্থী ও সমর্থকদের দেখা মেলেনি। তবে অডিটোরিয়ামের ভেতরের একটি রুমে সিলগালা করে রাখা হয়েছে ব্যালট বাক্স। এর পাহারায় আছেন ১১ পুলিশ সদস্য।

জানা গেছে, ভোটগ্রহণ শেষে রাত সাড়ে ৪টার দিকে ব্যালট পেপার গোছানো শেষ হয়। এরপর গণনা শুরু হলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী শাহ মনজুরুল হক তা বন্ধের দাবি তোলেন। তিনি দিনের বেলায় ভোট গণনার কথা বলেন।

তখন অপর সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী ভোট গণনা চালিয়ে যাওয়ার দাবি তোলেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে দুপক্ষের সমর্থকদের মাঝে হট্টগোল ও মারামারি শুরু হয়।

এ ঘটনায় সম্পাদক প্রার্থী শাহ মনজুরুল হকের সাত সমর্থকসহ নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ আহত হন।

একপর্যায়ে গণনা ছাড়াই নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সম্পাদক পদে যুথীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

ঘোষণায় তিনি বলেন, “অদ্য ৮/৩/২৪ ইং ভোট গণনার জন্য অন্য কোনও প্রার্থী উপস্থিত না থাকায় শুধুমাত্র নাহিদ সুলতানা যুথী সম্পাদক প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন। তাই তাকে সম্পাদক পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা গেল।”

ভোট গণনা ও ফলাফলের বিষয়ে জানতে চাইলে সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী শাহ মনজুরুল হক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা চাচ্ছি বিকাল ৩টা থেকে ভোট গণনা। আমাদের ছেলে-পেলেদের তো ট্রমাটাইজড (মানসিকভাবে আহত) করে ফেলেছে। আমাদের ৭/৮ আহত হয়েছে। এর মধ্যে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ ও আমার জুনিয়র জাকারিয়া হাবিব চিকিৎসাধীন আছে।”

এমন ঘটনা কেন ঘটল জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটার আসলে কোনও বর্ণনাই দিতে পারব না। নির্বাচন করেছি ভালো কথা, ৩টার দিকে গণনা হবে। উনি (যুথি) ওনার বাহিনী এনে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। এ খবর আমাদের কাছে আসার পরে আমরা বলেছি গণনার পরিবেশ নাই, পরে গণনা হবে।

“এটা উনি সহ্য করতে পারছেন না। ভোর ৬টার দিকে উনি নিজেই অনেকের সঙ্গে মারামারি করেছেন। অনেক নারী আইনজীবীর গলাধাক্কা দিয়েছেন, দেখিয়ে দিচ্ছেন একে মারো, ওনাকে মারো, তাকে ধরো।

“তখন কমিশন বলল, এই পরিবেশে গণনা করা যাবে না। শুক্রবার ৩টায় গণনা করতে চাই। তখন তিনি (যুথী) যুবলীগের পোলাপান ডেকেছেন। ভেতরে ঢুকিয়ে মারামারি করছে। আর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধানকে জিম্মি করে বলেছে, তাকে ঘোষণা দেওয়ার জন্য গণনা করা লাগবে না।”

নির্বাচন কমিশনের প্রধানের লিখিত ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা কোনও ঘোষণা হলো? গণনা ছাড়া এটা কীভাবে হয়।”

মারামারির এ ঘটনার জন্য নাহিদ সুলতানা যুথীকে দোষারোপ করে আহত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “বারের নির্বাচন নিয়ে কিছুটা বিতর্ক তৈরি করেছিল বিএনপি-জামায়াত। সেই বিতর্ক থেকে বের হয়ে আসতে এবং সুন্দর ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে টানা দুই দিন ধরে আমরা পরিশ্রম করে যাচ্ছি।

“কিন্তু আমার উপর নাহিদা সুলতানা যুথী যুবলীগের লোকদের দিয়ে সরাসরি আঘাত করেছেন। তিনি বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জোট করে এই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করেছেন। আমাকে মারধর করা হয়েছে। আমি এখন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছি।”

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তবে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “ভোটের পর আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ফলের অপেক্ষায় ছিলাম। এখনও আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।”

ভোট গণনার বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবুল খায়ের সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এখন আমরা এসব কিছুই করব না। পুরো কমিশনের মিটিং করতে হবে। মিটিং করে সিদ্ধান্ত হলে আপনাদের জানাব।”

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪ পদের বিপরীতে ৩৩ জন প্রার্থী হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৭ হাজার ৮৮৮ জন। ভোটগ্রহণ করা হয় দুই দিন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত