সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার মামলার প্রধান আসামি নাহিদ সুলতানা যুথীকে গ্রেপ্তারে একাধিক অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী যুথী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী।
অন্যদিকে মামলার অন্যতম আসামি ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শনিবার রাতে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তাকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
একই মামলায় এরই মধ্যে গ্রেপ্তার পাঁচ আইনজীবীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মারধর, ভাংচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে শুক্রবার সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
শাহবাগ থানায় দায়ের করা এ মামলায় আসামি করা হয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী ও বিএনপি সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ আইনজীবীকে। মামলার এজাহারে আরও ৩০-৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। যুবলীগের কর্মী এবং বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা এ হামলায় নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি নাহিদ সুলতানা যুথীকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তার ধানমন্ডির বাসায় একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। মামলার তদন্তভার এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) হস্তান্তর হয়েছে।
পুলিশের রমনা অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার আখতারুজ্জামান বলেন, “সব আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। প্রধান আসামি নাহিদ সুলতানা যুথীকে নিজ বাসায় পাওয়া যায়নি।”
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হয়। পরে শুক্রবার ভোট গণনা শুরু হলে গভীর রাতে হট্টগোল ও মারধরের ঘটনা ঘটে। তার মধ্যেই সম্পাদক পদে নাহিদ সুলতানা যুথীকে বিজয়ী ঘোষণা করে ভোটকেন্দ্র ছাড়েন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। বন্ধ হয়ে যায় ভোট গণনা। শনিবার নাহিদ সুলতানা যুথিকে বিজয়ী ঘোষণার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। এরপর বেলা তিনটার দিকে বিশেষ নিরাপত্তায় সমিতি ভবনের মিলনায়তন ও তিনটি হলরুমে একযোগে ভোট গণনা শুরু হয়।
শুক্রবার ভোরের ওই হামলার ঘটনার পর দিন পেরিয়ে রাতেই অভিযান চালিয়ে ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী, আইনজীবী কাজী বশীর আহম্মেদ, হাসানুজ্জামান তুষার, তরিকুল ইসলাম ও এনামুল হক সুমন। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।