পাউবো ও আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, সিলেট সীমান্তবর্তী ভারতের চেরাপুঞ্জিতে কয়েকদিন ধরে ভারিবর্ষণ হচ্ছে। সিলেটেও বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে হাওর-গুলো পানিতে পূর্ণ হয়ে গেছে। নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে আবার বন্যা হতে পারে সিলেটে।
এর আগে গত মাসে উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সুরমা-কুশিয়ারাসহ সিলেটের সব নদীর পানিই বিপৎসীমা অতিক্রম করে। সেই পানি ঢুকে পড়েছিল শহরের নিম্নাঞ্চলে।
সিলেট পাউবোর তথ্যমতে, শনিবার দুপুর ১২ টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যা সকাল ৯টায় ছিল বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে।
একই সময়ে কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যা সকাল ৯টায় ছিল বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপরে।
এছাড়া লোভা, সারি, সারিগোয়াইনসহ জেলার প্রত্যেক নদীর পানিই বেড়েছে। তবে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ সকাল সন্ধ্যাকে জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫১৩ মিলিমিটার। আগামী দুই দিন উজানে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে সিলেটে আবার বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
তিনি জানান, সিলেটেও বৃষ্টি হচ্ছে। হাওরগুলো পানিতে পূর্ণ থাকায় নদীর পানি নামতে পারছে না। উজানের পানি নামতে শুরু করায় সিলেটে নদ-নদীর পানি বাড়ছে।
সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, এমনিতেই এ মৌসুমে বন্যার ঝুঁকি থাকে। এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি। সম্ভাব্য দুর্যোগ মাথায় রেখে শনিবার থেকে সিলেটে পাউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসাইন সকাল সন্ধ্যাকে জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৫৬ মিলিমিটার।
সিলেট অঞ্চলে ভারি থেকে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসাইন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান সাংবাদিকদের জানান, আবারও বন্যার আশঙ্কা থাকায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে সব উপজেলা প্রশাসনকে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।