Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

সিলেটে দেশের প্রথম প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথকীকরণ প্ল্যান্ট চালু

এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে বর্জ্য থেকে প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাদা করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে বর্জ্য থেকে প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাদা করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

প্লাস্টিক ও কঠিন বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার থানার লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে গড়ে তোলা হয়েছে দেশের প্রথম প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথকীকরণ প্ল্যান্ট। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম শনিবার এই প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন। এরপর রবিবার চালু হয়েছে প্ল্যান্টটির কার্যক্রম।

১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। তাদের সহায়তা করছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড।

এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে বর্জ্য থেকে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর অপচনশীল প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাদা করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার প্ল্যান্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সিসিক ও লাফার্জহোলসিমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “প্লাস্টিক বর্জ্যের টেকসই ব্যবস্থাপনা আমাদের দীর্ঘদিনের চ্যালেঞ্জ। এটি মোকাবিলায় নানা ধরনের টেকসই পদক্ষেপ নিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশ সরকারও সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণ হ্রাসে কাজ করে যাচ্ছে।”

সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, সিসিক ও লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে এটাই দেশের প্রথম প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথকীকরণ প্ল্যান্ট। এ প্রকল্পে সিটি করপোরেশনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকার পাশাপাশি সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে লাফার্জহোলসিম। প্ল্যান্টটি চালু হওয়ায় প্লাস্টিক বর্জ্যের হাত থেকে মুক্তি পাবে সিলেটবাসী।

শনিবার প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথকীকরণ প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ছবি: সকাল সন্ধ্যা

প্ল্যান্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, “সিলেটকে একটি প্লাস্টিকমুক্ত নগরীতে রূপান্তর করা আমাদের লক্ষ্য। প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথকীকরণ প্ল্যান্টের মাধ্যমে নগরীর বর্জ্য আমরা দ্রুত অপসারণ করতে পারব।”

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, “লাফার্জহোলসিম ছাতকে দেশের একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ প্ল্যান্টে বিভিন্ন ধরনের অপচনশীল পণ্য টেকসই উপায়ে কো-প্রসেস (বর্জ্যকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার) করছে। এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে সিসিকের অপচনশীল প্লাস্টিকের পণ্যগুলো আমরা কো-প্রসেস শুরু করতে যাচ্ছি। এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি।”

পরিবেশে কী পরিমাণ প্লাস্টিকের পণ্য ছড়িয়ে আছে, সেই হিসাব তুলে ধরেন ইকবাল চৌধুরী। তিনি বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে বর্জ্যের পরিমাণ বছরে ২০ মিলিয়ন টন ছাড়াবে। তিন দশক আগেও এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৫ মিলিয়ন টন। প্রতি ১০ বছরে বর্জ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হচ্ছে।”

এই বর্জ্যের বড় অংশ প্লাস্টিক, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর- একথা উল্লেখ করে ইকবাল চৌধুরী বলেন, “২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একজন বাংলাদেশি প্রতি বছর ৯ কেজি প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার করে। অর্থাৎ ১৭ কোটি জনসংখ্যা হিসাব করলে মোট প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহারের পরিমাণ ১৬ লাখ টনেরও বেশি, যার পুরোটাই পরিবেশে ফেরত আসছে।”

“এ থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় টেকসই উপায়ে প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবস্থাপনা করা”, বলেন তিনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত