গুরুকে কতভাবেই না দক্ষিণা দিয়ে থাকেন শিষ্যরা! এবার জাতীয় দলের স্ট্রাইকার তহুরা খাতুন তার দুই ফুটবলগুরুকে সম্মানিত করলেন কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালায় দাঁড়িয়ে।
ভুটানকে গুরুত্বপূর্ণ সেমিফাইনালে উড়িয়ে দেওয়ার পর ম্যাচ সেরা হন তহুরা। আর সেই পুরস্কার উৎসর্গ করেন সাবেক দুই ফুটবল গুরু ময়মনসিংহের কলসিন্দুর স্কুলের সাবেক শিক্ষক মফিজ উদ্দিন ও জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনকে।
মফিজ উদ্দিনের হাত ধরে উঠে এসেছে জাতীয় দলের একাধিক নারী ফুটবলার। এদেরই একজন তহুরা খাতুন। ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি। টানা দ্বিতীয়বারের মতো জিতে নিয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। এরপরই তিনি পুরস্কারগুলো সাবেক কোচদের নামে উৎসর্গের ঘোষণা করেন।
ম্যাচ শেষে তহুরা বলেন, “এই পুরস্কারটা আমার সাবেক দুই কোচ ছোটন স্যার ও মফিজ স্যারের নামে উৎসর্গ করেছি।”
সিরাত জাহান স্বপ্না, কৃষ্ণা রানী সরকারদের ভীড়ে জাতীয় দলের একাদশে সুযোগ মিলত না তহুরা খাতুনের। কিন্তু স্বপ্নার অবসর ও কৃষ্ণার চোট একাদশে নিয়মিত খেলার সুযোগ করে দিয়েছে তহুরার। সেই সুযোগটা কি দারুণভাবেই না কাজে লাগাচ্ছেন।
ভারতের বিপক্ষে তিনি করেন জোড়া গোল। ভুটানের বিপক্ষে করলেন হ্যাটট্রিক। টুর্নামেন্টে এরই মধ্যে ৫ গোল করে ফেলেছেন।
নিজের এই কৃতিত্বের জন্য তহুরা সতীর্থদের ধন্যবাদ দিলেন, “আসলে যে ৪ দল সেমিফাইনালে উঠেছে সব দলই ভালো। এই ম্যাচের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক ফুটবলারের মধ্যে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা ছিল। আমার সতীর্থরা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে গোল পেতে। এজন্যই আমি তিনটা গোল করতে পেরেছি। আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ যে আমরা ম্যাচটি জিতেছি।”
এখনই কোনও উদযাপন করতে চান না তহুরা। চ্যাম্পিয়ন হয়েই করতে চান আনন্দ উল্লাস, “আমরা এখন কোনও সেলিব্রেশন করতে চাইনা। আমরা ফাইনালে উঠেছি। ফাইনালেও আমরা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা “
গত সাফের সেমিফাইনালে ভুটানকে প্রথমার্ধে ৪ গোল দিয়ে লিপস্টিক পরে উদযাপন করেছিল। কিন্তু এবার সে সব বাদ দিয়ে শুধু ফাইনালে ওঠার চিন্তা ছিল সবার মাথায়। তহুরা বলছিলেন, “গতবার ভুটানকে হারিয়ে লিপস্টিক পরেছিলাম। কিন্তু এবার তেমন কোনও পরিকল্পনা ছিল না। আমরা যেহেতু গতবারের চ্যাম্পিয়ন দল তাই যেভাবেই হোক আমাদের পরিকল্পনা ছিল ম্যাচটা জিততে। ফাইনালে যেতে। সবাই আজ শতভাগ উজাড় করে দিয়ে খেলেছে।”
গ্যালারির এক পাশে সারাক্ষণ স্থানীয় স্কুলের ছাত্ররা বাংলাদেশের ফুটবলারদের সমর্থন দিয়েছেন। ম্যাচের পর তাদের ধন্যবাদ জানাতেও ভুলেননি তহুরা, “ ঢাকায় যারা খেলা দেখেছে এবং এখানে নেপালের স্কুলের বাচ্চারা আমাদের সমর্থন দিয়েছেন। এজন্য ওদের ধন্যবাদ।”