ইনজুরি আর তাসিকন যেন সমার্থক। চোটের ভয়ে গত বছর আইপিএলকেও না বলেছিলেন তিনি। এবার একই কারণে খেলেননি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজও। সেই ভয়ই কাল হলো তাসকিন আহমেদের। কাঁধের ইনজুরির কারণে তিনি বিশ্বকাপ শুরুর আগে পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। ১৫ জনের দলে থাকলেও খেলতে পারবেন না যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের প্রাক-বিশ্বকাপ সিরিজটি। এমনকি বিশ্বকাপেও শুরুর ম্যাচগুলোতে এই পেসারকে পাওয়া নিয়ে সংশয় থাকছে।
তাসকিনকে নিয়ে বিসিবিও অতি সতর্ক ছিল। হলে কি হবে! অমন যত্নে রেখেও তার ইনজুরি ঠেকানো যায়নি। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুও আক্ষেপ করেছেন, “আমরা নিজেরাও আক্ষেপ করছি যে ওর ইনজুরিটা হয়তো এড়ানো যেত। আসলে আমাদের দিক থেকে সুনির্দিষ্ট কোনও পরামর্শ ছিল না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাসকিনের খেলা শেষ ম্যাচের আগে আমরা টিম ম্যানেজমেন্টকে কিছু বলিনি। হয়তো এড়ানো যেত। সবই ভাগ্যের লিখন।”
তাসকিনের ইনজুরি এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি এসেছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ থেকে। ওই সময় দেশে তাপদাহ চলছিল। প্রচণ্ড গরমেই আবাহনীর হয়ে ৮ ম্যাচ খেলতে হয়েছিল তাসকিনকে। এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে চার ম্যাচ খেলেছে। আবাহনী হয়ে বা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অত চাপ না নিলেই হতো।
তখন ইনজুরিতে পড়ার শঙ্কাও থাকতো না তার। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে চতুর্থ ম্যাচে ফিল্ডিং করতে গিয়ে কাঁধে চোট পান তাসকিন। পুরোনো জায়গায় নতুন চোটে তাসকিন কবে নাগাদ সুস্থ হয়ে উঠবেন তা এখনই বলতে পারছে না বিসিবি। বিসিবির চিকিৎসা বিভাগ থেকে সকাল সন্ধ্যাকে জানানো হয় এমন ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে দুই সপ্তাহ লাগে।
স্বাভাবিক ভাবেই তাসকিনের যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজে খেলা হচ্ছে না। ৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও তাকে পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে। প্রধান নির্বাচক জানিয়েছেন, “যতটুকু তথ্য আছে সেটা হল বিশ্বকাপ চলাকালীন সে সুস্থ হয়ে উঠবে। এবারের নিয়ম হলো একজন ইনজুরড ক্রিকেটারকেও দলে রেখে টুর্নামেন্টে ঢুকতে পারবেন এবং সে যদি সুস্থ হয় তো ভাল, না হলে পরিবর্তন করা যাবে।”
তাসকিন যদি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকেই যান তবে এই পেসারের বদলে একজন ক্রিকেটার নেয়া যাবে বলেও নিশ্চিত করলেন গাজী আশরাফ।
এই অবস্থায় তাসকিনকে সহ-অধিনায়ক করে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করা হয়েছে। ইনজুরিতে পড়া ক্রিকেটারের সহ-অধিনায়ক থাকার কারণ হিসেবে প্রধান নির্বাচক বলেছেন, “এটা বিসিবির সিদ্ধান্ত। দীর্ঘদিন ধরে সে ভালো করছে একটা বিভাগে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তাসকিনকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।”
সবাই কামনা করছে, তাসকিনের সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক। ২০১৯ বিশ্বকাপ মিসে তাসকিনের কান্না সবার মনে আছে। সেটা কেউ চায় না, নিজের সেরা ছন্দে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বোলিংয়ের নেতৃত্ব দেবেন, এটাই সবার প্রত্যাশা।
