যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলেও বাংলাদেশ নীতিতে কোনও পরিবর্তন আশা করছেন না অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
ট্রাম্পের বিজয়ের পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকায় এনিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি পাল্টা বলেন, “তিনি (ট্রাম্প) কোনও ইঙ্গিত দিয়েছেন কি যে ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কের অবনতি হবে?”
যুক্তরাষ্ট্রে বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ভোটের প্রচারের সময় গত সপ্তাহে ট্রাম্প সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ এক পোস্টে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের নিন্দা জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে বর্বর সহিংসতা হয়েছে, আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই। দেশটি একটি গোলযোগপূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হামলার বিষয় ধরে ওই পোস্ট লিখেছিলেন ট্রাম্প। ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবশ্য সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করে আসছে।
এই অবস্থায় ডেমোক্রেটদের হটিয়ে রিপাবলিকান ট্রাম্পের ক্ষমতায় যাওয়া বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব রাখতে পারে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে তা সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিল বলে বাসস জানিয়েছে।
তখন তিনি বলেন, বর্তমান জো বাইডেনের সরকারের তুলনায় ট্রাম্পের প্রশাসনের অধীনে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে না।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক শুধু ওয়াশিংটনে ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দল দ্বারা নির্ধারিত হয় না।
দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্কে স্থিতিশীলতা থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা বাইডেন প্রশাসনের সাথে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছি, তা মূলত পূর্ববর্তী ট্রাম্প প্রশাসনের ধারাবাহিকতা। তিনি (ট্রাম্প) বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের কথা বলেননি।”
ট্রাম্প ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সেবার তিনি ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়েছিলেন।
হিলারির সঙ্গে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকায় বাংলাদেশে কারও কারও ধারণা, বিশ্বের প্রভাবশালী দেশটিতে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য তা সমস্যার হবে।
তবে সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ভোটের আগে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিক দুই পার্টিরই সিনিয়র লিডারদের খুব ভালো সম্পর্ক। তার বন্ধু দুই দলের মধ্যেই আছে।
“সম্পর্ক অনেকখানি নির্ভর করে ব্যক্তিগত অ্যাটাচমেন্টের ওপর। ড. ইউনূস একজন গ্লোবাল লিডার। তাই মার্কিন নির্বাচনে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে-ই বিজয়ী হোক না কেন, আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনও চ্যালেঞ্জ হবে না।”