দেশের বাগানগুলোতে গত বছর যে পরিমাণ চা উৎপাদন হয়েছে, তা স্মরণকালে রেকর্ড। এতে যে রপ্তানি বাড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে চায় সরকার।
সোমবার ‘জাতীয় চা দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
তিনি বলেন, “২০২৩ সালে দেশের চা বাগানগুলোতে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে, যা চা শিল্পের ইতিহাসে উৎপাদনের অতীতের সকল রেকর্ডকে পিছে ফেলেছে। উৎপাদনের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আগামীতে চাহিদার অতিরিক্ত চা রপ্তানির প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাবে।
“প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে কাজ করছে। চা দেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য। চা রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বাড়াতে কাজ করছে সরকার।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ চা বোর্ডের উদ্যোগে ৪ জুন (মঙ্গলবার) চতুর্থবারের মতো ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন করা হবে। আর দ্বিতীয়বারের মতো ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ দেওয়া হবে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্প, রপ্তানিমুখী চা শিল্প’।
ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার জাতীয় চা দিবস উদযাপনের পাশাপাশি চা শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৮টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার-২০২৪ দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, দেশে বর্তমানে ১৬৮টি বৃহৎ চা বাগান এবং প্রায় ৮ হাজার ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান রয়েছে। একসময় চা ছিল দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য। গত দুই দশকে মানুষের আয় ও ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বহুলাংশে বেড়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, গত বছর ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের ১৩টি দেশে প্রায় ১০ লাখ কেজি চা রপ্তানি করা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় ৩৩ শতাংশ বেশি। চা রপ্তানি উৎসাহিতকরণে ৩ শতাংশ রপ্তানি প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত ১৪টি দেশে প্রায় ১০ লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়েছে।
১৯৫৭ সালের ৪ জুন থেকে ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
চা শিল্পে জাতির পিতার অসামান্য অবদান ও চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তার যোগ দেওয়ার তারিখকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০২০ সালের ২০ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৪ জুনকে ‘জাতীয় চা দিবস’ ঘোষণা করা হয়।