Beta
শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪

টিনএইজ সন্তান সামলাতে সাত শলা

Father with teenager
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

টিনএইজ বয়সী সন্তান কথা শুনবে ও সম্মান করবে তা অনেক অভিভাবকের বেলায় সহজ হয়ে ওঠে না।  আবার বনিবনা না হওয়ার এই মুহূর্তে সন্তানের সঙ্গে চিৎকার করেও লাভ হয় না।

কেন সন্তান কথা শুনছে না?

যদি উঠতি বয়সী সন্তান বেছে বেছে কথা শোনে অথবা একেবারেই কোনো কথা শুনতে নারাজ থাকে তাহলে এই পরিস্থিতিতে অভিভাবক অসহায় বোধ করতেই পারেন। তবে হতাশ না হয়ে সন্তানের আচরণ ও মন বোঝার চেষ্টা করতে হবে।

বয়ঃসন্ধি বেলার অহমকেন্দ্রিকতা এবং আত্মকেন্দ্রিকতা পর্বে টিনএইজ বয়সীদের মনে হয় তারা বড়দের চেয়েও বেশি জানে। অনেক গবেষণা বলছে, ক্রমাগত বাবা-মায়ের কণ্ঠ শোনার চেয়ে বয়ঃসন্ধিকালে অপরিচিতদের কথা শুনতে বেশি আগ্রহী থাকে সন্তানরা।

পরিবারে কঠোর পরিবেশ, আর্থিক অস্বচ্ছলতা, নিপীড়ন, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, চাকরি হারানো অথবা কোনো দুরারোগ্য রোগের অভিজ্ঞতা গভীর ছাপ ফেলতে পারে টিনএইজ মনে। ক্রনিক স্ট্রেস বা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভোগা টিনএইজ বয়সীদের আচরণে নানাভাবে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে। তাতে অভিভাবকের সঙ্গে অমিল ও বনিবনার অভাব বাড়তে পারে।

সন্তানকে কীভাবে অভিভাবকের কথার প্রতি মনোযোগী করানো যায়, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের রযেছে সাতটি পরামর্শ।

দ্বন্দ্ব থেকে সন্ধি

মাঝেমধ্যে সন্তান ও অভিভাবকের মধ্যে কথার অমিল হওয়াতে চোখ কপালে তোলার কিছু নেই। বুঝে নিতে হবে, টিনএইজ সন্তান চিন্তা-ভাবনায় স্বাধীন হওয়ার চেষ্টা করছে। তাই শান্ত হয়ে তাদের কথার বিষয়বস্তু ও দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে হবে আগে। এরপরই আসলে অভিভাবক হিসাবে নিজের করণীয় বেছে নেওয়া সহজ হয়ে উঠবে।

সঠিক পথে চলা

কোন কাজ, আচরণ এবং সিদ্ধান্ত সুস্থ ও স্বাভাবিক তা নিয়ে সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করা যেতে পারে।তারপর সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলে নিয়ম মেনে চলায় বাদানুবাদ কমে আসবে। টিনএইজ সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে যাচ্ছে এসব জানা ও জানানোর অভ্যাস গড়ে তোলা সহজ হবে।

সন্তানকে সম্মান

কিশোর বয়সী সন্তান বাবা-মায়ের সব কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলবে এমন আশা করাও ভুল। টিনএইজ বয়স মানেই হলো এই সময় তারা অন্যের কথা নিয়ে হাসাহাসি করবে। তাই সন্তান ও বাবা-মায়ের মধ্যে মতের পার্থক্য হবে তা মেনে নেওয়ার পরিবেশ রাখতে হবে পরিবারে। যখন বাবা-মা এগিয়ে এসে সন্তানের কথাকে সম্মান দিতে শুরু করবে তখন সন্তানের মনেও পরিবর্তন আসবে।

টিনএইজ কাজ-কথায় আগ্রহ

টিনএইজ বয়সী সন্তান ঘরে, বাইরে, স্কুলে কী করছে এসব গল্পের ছলে জেনে বাবা-মা তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া বাড়িয়ে নিতে পারেন। স্কুলের পড়া রপ্ত করায় সন্তানকে সঙ্গ দিন। তাদের মনের সবরকম অনুভূতি প্রকাশে সব সময় উৎসাহ দিন। তবে টিনএইজ সন্তানকে নিয়ে আগ্রহ যেন অতিরিক্ত না হয়ে যায়, তাও খেয়াল রাখতে হবে।

একসঙ্গে সময় কাটান

সন্তানের বিভিন্ন বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের ধরনেও ভিন্নতা আসে। তাই সন্তানের সঙ্গে চমৎকার সময় কাটানোর দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। টিনএইজ বয়স মানেই রোমাঞ্চ, উচ্ছ্বাস আর উদ্দীপনা। তাই এই সময়টুকু তাদের উপভোগ করতে দিন। কারণ এই বয়স তারা দ্রুত পেরিয়ে যাবে। বাবা-মা হিসাবে টিনএইজ সন্তানকে আস্থা দিন যে সব সময় তাদের সঙ্গে আছেন।

জীবনের গল্প বলুন

বাবা-মায়ের জীবনে সব কথা, কাজ, সিদ্ধান্তই সঠিক হয়ে এসেছে সব সময় এমন ধারণা দেওয়ার বদলে নিজের ভুলের কথাও অকপটে বলুন সন্তানকে। তাদের কাছে আফসোস ও অনুশোচনার সঙ্গে স্বীকার করুন সুযোগ পেলে কী কী শোধরাতে চান। ভুল থেকেও ফিরে আসার পথ আছে সেই বার্তা সুন্দর ভাবে পৌঁছে দিন সন্তানের ভাবনার গভীরে।

নিজের দিকে তাকান

বাবা-মা চরিত্রে কাউকে শতভাগ আদর্শ হতে হবে এমন ধারণা খুব ভুল। তাই নিজের দিকে হেলা করা যাবে না। সব সময় সন্তানের দিকে চোখ না দিয়ে নিজের ভালোলাগার মতো করে সময় কাটান। নিজের জীবন এবং কাজেও প্রাধান্য দিন। আপনাকে দেখে টিন এইজ সন্তানও বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসাবে নিতে শিখবে।     

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত