Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

বাবাকে না পেয়ে গ্রেপ্তার, সেই কিশোরের জামিন   

ss-coxbazar-court-051212
[publishpress_authors_box]

কক্সবাজারের টেকনাফে বাবাকে না পেয়ে যে কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ, তার জামিন হয়েছে। একইসঙ্গে জামিনের বিষয়টি হাই কোর্টে রাষ্ট্রপক্ষ অবহিত করার পর আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) করা রিট আবেদনটি আগামী রবিবারের কার্যতালিকায় নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মজিদের আদালত ওই কিশোরের জামিনের আদেশ দেয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোহাম্মদ ইউনুছ।

জামিন পওয়া ওই কিশোর টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সে হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাবা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য রেজাউল করিম।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে মামলার আসামি ওই কিশোরের আইনজীবীরা আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে শুনানি করে। এতে বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষে আদালত আসামির বয়স ও চলমান বার্ষিক পরীক্ষার সময়সূচি বিবেচনায় নিয়ে স্থায়ী জামিনের আদেশ দেয়।

গত ২৯ নভেম্বর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানিয়েছিল, গত ২৬ নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে এক অভিযান চালানো হয়। সেই সময় একটি বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে দুইজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে একজনকে আটক করা হয়। পরে তার হাতে থাকা একটি নীল রংয়ের শপিং ব্যাগের ভেতর একটি বিদেশি পিস্তল, ছয়টি গুলি এবং ৪০টি নীল রংয়ের কার্তুজ পাওয়া যায়। পরে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তা জব্দ করা হয়। অস্ত্রটি ওই কিশোরের বাবা তাকে পাশের বাড়ির পেছনে লুকিয়ে রাখার জন্য দিয়েছিলেন। কিশোরের বাবা সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায় জড়িত।

এ ঘটনায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে ওই কিশোরকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল বলে জানায় পুলিশ।

তবে কিশোরের বাবা রেজাউল করিম বলেন, “রাজনৈতিক কারণে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমাকে না পেয়ে আমার শিশু পুত্রকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়েছে। সে মেধাবি। চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় আমার পুত্র অংশ নিতে পারল না।”

তিনি এ মামলার সাক্ষী প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী সুফাইদা আকতার ও মৌলভী জামাল হোসাইনের সঙ্গে আলাপ করার কথা বলেন।

মামলার সাক্ষী প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী সুফাইদা আকতার বলেন, “ওই দিন মধ্যরাতে পুলিশ তার ঘরে ঢোকে। কোনও কথা না বলে ঘরের আলমারি খুলে কী যেন খুজতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার আলমিরাতে অস্ত্র পেয়েছে বলে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে চলে যায়।”

অন্য সাক্ষী মৌলভী জামাল হোসাইন বলেন, ভোরে মসজিদে যাওয়ার পথে পুলিশের ওসি তাকে দাঁড় করান। ওই সময় রেজাউলের ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করতে দেখেন। ওসি তাকে জানান অস্ত্রসহ শিশুটিকে আটক করেছে। এরপর একটি কাগজে স্বাক্ষর নেন। এটা মামলার সাক্ষী কি না জানি না।

এ-সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, যা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন বুধবার সকালে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে তুলে ধরেন।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই ব্যাপারে বুধবার বিকালের মধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন।

বুধবার বিকালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান আদালতে বলেন, “এক দিনের মধ্যে হালনাগাদ তথ্য জানানো যাবে আশা করছি।”

এর মধ্যে ওই কিশোরকে যে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়নি, তা নিশ্চিত করতে তাকে আদালতে হাজির করতে ও মুক্তি দিতে নির্দেশনা চেয়ে বুধবার রিট করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। রিট আবেদনটি বৃহস্পতিবার কার্যতালিকায় ওঠে।

ক্রম অনুসারে বিষয়টি উঠলে ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল তানিম খান বলেন, কিশোর জামিন পেয়েছে। সে বের হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

এ সময় আসকের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ওই কিশোর জামিনে মুক্তি পাচ্ছে। রিটটি আগামী রবিবার কার্যতালিকায় আসবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত