রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে এসেছে। এতে তিস্তা নদীর পানিও নেমে এসেছে বিপৎসীমার নিচে।
এই পরিস্থিতিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের দেখা দেওয়া আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকালে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। রবিবার সকাল ৯টায় এই পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।
সোমবার সকালে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে জানানো হয়, আগামী তিন দিন পর্যন্ত তিস্তার পাশাপাশি ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানিও কমতে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী সংলগ্ন চরাঞ্চল এবং কতিপয় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।
রংপুর বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদী– আপার আত্রাই, পূনর্ভবা, আপার করতোয়া, টাঙ্গন ও যমুনেশ্বরী নদীর পানিও কমছে বলে বুলেটিনে জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে এবং আগামী পাঁচ দিন ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি আরও বাড়তে পারে। তবে পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে, যে ধারা মঙ্গলবারও অব্যাহত থাকতে পারে জানিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বলছে, এর সঙ্গে পরবর্তী দুই দিন পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টির প্রবণতা থাকায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। তবে পানি বাড়লে তা বিপৎসীমা ছাড়ানোর শঙ্কা নেই।
এদিকে, চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ভারি বৃষ্টির প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, গোমতী ও ফেনী নদীসমূহের পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যের বরাত দিয়ে বুলেটিনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট বঙ্গোপসাগর এলাকায় কোনও লঘুচাপ না থাকায় আগামী তিনদিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীসমূহে স্বাভাবিক জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে।
এদিকে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে জানিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে, ১১৩ মিলিমিটার।