Beta
বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫

৮ অপহৃত উদ্ধারে গিয়ে মিলল ১০ জন

cox kidnapping (1)
[publishpress_authors_box]

গত দুইদিনে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ৮ জনকে অপহরণের তথ্য ছিল পুলিশের কাছে। তাদের উদ্ধারে পাহাড়ী এলাকায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। পরে উদ্ধার করা হয় ১০ জনকে।

টেকনাফ থেকে ২ দিনে ৮ জন অপহরণের তথ্য ছিল পুলিশের কাছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ বা তথ্য পুলিশকে জানাচ্ছিল না অপহৃতদের স্বজনরা। তারপরও টেকনাফের জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। দীর্ঘ সাড়ে ৬ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় উদ্ধার করা হয় ১০ জনকে। তবে অপহরণকারীদের ধরতে এখনও পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।

তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে অপহরণকারী চক্রের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায় বলে জানান টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি। তিনি বলেন, “বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে টেকনাফ থানা, হোয়াইক্যং ও বাহারছড়া ফাঁড়ির ৫০ জন পুলিশ একসঙ্গে টেকনাফের জাহাজপুরা পাহাড়ে অভিযান শুরু করে। অভিযানে যোগ দেয় র‍্যাব সদস্যরা। রাতে সাড়ে ১২টার দিকে অপহৃত ১০ জনকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় অপহরণকারি চক্রটি। পরে তাদের উদ্ধার করা হয়।”

উদ্ধার হওয়া ১০ জন অক্ষত ছিলেন, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অপহরণকারিদের ধরতে পাহাড়ে অভিযান চলমান রয়েছে বলেই জানান ওসি। ওসমান গনি বলেন, “এখানে মুক্তিপণের কোনও বিষয় নেই। একাধিকবার চেষ্টা করেও অপহৃতদের স্বজনদের কাছ থেকে তথ্য না পাওয়ায় পুলিশ তার কাজে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েন। সবকিছুর মধ্যেই অপহরণকারীদের চিহ্নিত করতে কাজ করছে পুলিশ।”

ওসি জানান, স্বজনরা লিখিত বা সরাসরি পুলিশকে কোনও অভিযোগ বা তথ্য দেয়নি। কিন্তু বুধবার দুপুর ২ টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং ১২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিম পাহাড়ী এলাকা থেকে ৬ জন এবং মঙ্গলবার টেকনাফের হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকায় গরু আনতে গিয়ে ২ জন অপহরণের তথ্য ছিল। কিন্তু অভিযানে উদ্ধার হল ১০ জন। অন্য ২ জনকেও মঙ্গলবার পুটিবুনিয়া পাহাড়ী এলাকায় থেকে অপহরণ করা হয়।

উদ্ধারকৃতরা হলেন, টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের করাচি পাড়া এলাকার লেদু মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া (১৫), বেলালের ছেলে জুনাইদ (১৩), নুরুল আমিনের ছেলে সাইফুল (১৪), শহর আলীর ছেলে ফরিদ (৩৫), নাজির হোছনের ছেলে সোনা মিয়া (২৪), শহর মুল্লুকের ছেলে গুরা পুইত্যা (৩২)। এই ৬ জনকে উনচিপ্রাং এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়।

এছাড়া হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং উত্তর পাড়ার আলী আকবরের ছেলে ছৈয়দ হোসেন ওরফে বাবুল (৩৩) এবং রইক্ষ্যং দক্ষিণ পাড়ার কালা মিয়া ওরফে লম্বা কালুর ছেলে ফজল কাদেরকে (৪৭) পুটিবুনিয়া এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। এছাড়া টেকনাফের হোয়াইক্যং রোজার ঘোনা এলাকার আমির হোসেনের ছেলে অলি আহমদ (৩২) এবং কম্বনিয়া এলাকার ফিরুজের ছেলে নুর মোহাম্মদকে (১৭) টেকনাফের হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়।

অপহরণ বন্ধে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি। তিনি বলেন, “তা না হলে সফল হওয়া যাবে না।”

গত এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১৭ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের পরিবারের তথ্য বলছে অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫১ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে। এর মধ্যে গত ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে অপহরণ হওয়া মাদ্রাসা ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে ২০ দিনেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি । যদিও এ অপহরণ ঘটনায় ব্যবহৃত অটোরিকশার চালক ও সংঘবদ্ধ চক্রের নারী সদস্যসহ চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ৫ জনই রোহিঙ্গা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত