মিয়ানমার থেকে শুক্রবার সকালের পর বিকট কোনও বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাননি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। তারা বলছেন, টানা তিন দিন ধরে নাফ নদীর মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় থাকা জাহাজটিও আর দেখা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবার রাতের কোনও এক সময় জাহাজটি সেখান থেকে চলে গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ১২ জুন বুধবার দুপুরে নাফ নদীর টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মৌলভীপাড়ার বিপরীতে মিয়ানমারের কাছে বড় আকারের ওই জাহাজটি প্রথম দেখা যায়। সেদিন রাত ৯টার দিকে ওপার থেকে ভেসে আসতে থাকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। এভাবে চলে টানা ৩ ঘণ্টা। এরপর রাতভর থেমে থেমে আসে বিস্ফোরণের শব্দ। বৃহস্পতিবার ভোররাত ৪টার দিকে আবারও আসতে থাকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ, যা চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত।
পরে জাহাজটি দক্ষিণে সরে টেকনাফের নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার দিনের বাকি সময় সেই জাহাজ থেকে মিয়ানমারের স্থলভাগে থেমে থেমে গুলি ও মর্টার শেল বর্ষণের শব্দ আসে। শুক্রবার সকালে বন্ধ হয় বিস্ফোরণের শব্দ আসা। শনিবার সকাল থেকে জাহাজটি দেখা যাচ্ছে না।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে টেকনাফের নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে মিয়ানমারের অংশে জাহাজটি ছিল। এটি শনিবার সকাল থেকে আর দেখা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবার রাতের কোনও এক সময় সেখান থেকে জাহাজটি চলে গেছে।
শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সীমান্তের ওপার থেকে কোনও ধরনের বোমাবর্ষণ ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছেন সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান।
মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনার পর আতঙ্কে বন্ধ করে দেওয়া হয় টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন রুটে নৌযান চলাচল। সাতদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার বিকল্প পথে চলাচল শুর করে এসব নৌযান।
টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরের সংঘাত পর্যাবেক্ষণ করা হচ্ছে। সার্ভিস ট্রলারগুলো বিকল্প পথে সেন্ট মার্টিন যাতায়াত করছে। পাঠানো হয়েছে খাদ্য পণ্যও।
টানা সাড়ে তিন মাস ধরে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর লড়াই চলছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু টাউনশিপের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দুটি শহরসহ, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪টি সীমান্তচৌকি, রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপের বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন মংডু শহর দখলের জন্য লড়ছে তারা।