Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

চবির ‘সাময়িক’ উপাচার্য ইয়াহ্ইয়া আখতার

ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার
ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার
[publishpress_authors_box]

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতারকে সাময়িক নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক। চাকরি শেষে অবসর জীবন যাপনের মধ্যেই তাকে নিয়োগ দিল সরকার।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ অনুযায়ী অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতারকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িকভাবে উপাচার্য পদে নিয়োগ প্রদান করা হলো।”

৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দীর্ঘদিন আন্দোলন-বিক্ষোভে উত্তাল থাকার পর ধীরে ধীরে শান্ত হতে থাকে দেশের শিক্ষাঙ্গণ।

তবে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা পদত্যাগ করতে থাকেন। ফলে উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশাসনিকভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়তে শুরু করে।

এরই মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার উপাচার্য নিয়োগ দিলেও বাকি ছিল চট্টগ্রামসহ আরও কয়েকটির নিয়োগ। উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সবশেষ মঙ্গলবার বিকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর পরদিনই উপাচার্য নিয়োগের প্রজ্ঞাপন এল।

যদিও ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্‌ইয়া আখতার যে উপাচার্য নিয়োগ হচ্ছেন সে গুঞ্জন গত সপ্তাহেই ছড়িয়েছে। কেবল প্রজ্ঞাপন প্রকাশ হতে দেরি হচ্ছিল।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের পাশাপাশি একই দিন শিক্ষা মন্ত্রনালয় আরও পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালযয়েই কেবল সাময়িক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটেরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের স্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সাধারণত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে চট্টগ্রামের বাসিন্দারাই অগ্রাধিকার পান। এতদিন যারা বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন তাদের সবাই চট্টগ্রামের সন্তান ছিলেন। এবারই প্রথমবারের মতো উপাচার্য হিসেবে এমন একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যার বাড়ি খুলনা বিভাগে।

মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগ থেকে ১৯৭৯ সালে স্নাতক ও ১৯৮১ সালে স্নাতকোত্তর করেন। এছাড়া কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলু থেকে দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পরে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনি থেকে পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেন।

১৯৮২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ড. ইয়াহ্ইয়া। পদোন্নতি পেয়ে ১৯৮৬ সালে হন সহকারী অধ্যাপক, ১৯৯২ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ১৯৯৯ সালে হন অধ্যাপক। ২০২৩ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসরে যান।

সাবেক উপাচার্যের পদত্যাগের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শীর্ষ পদে নতুন নিয়োগ নিয়ে বিএনপি এবং জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। সে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিলে সামনে আসে ইয়াহ্‌ইয়া আখতারের নাম, যার সঙ্গে সরাসরি কোনও দলের সংশ্লিষ্টতা নেই।

বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়বাদী শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক ড. নসরুল কদির নতুন উপাচার্য নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার একজন পুরোদস্তুর গবেষক। তিনি ভালো মানুষ, ভালো লেখক। তিনি উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বাড়বে। তিনি কোনও দলের সঙ্গেও যুক্ত নন। উপাচার্য বা প্রশাসক হিসেবে তিনি যাতে সফল হন তাতে আমাদের অবশ্যই সহযোগিতা থাকবে।”


আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত