সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে এলেন চাইনিজ তাইপের কোচ চান হিউ মিং। এই কোচের কথা বলা শেষ হতে না হতেই কক্ষে ঢুকলেন বাংলাদেশের কোচ পিটার জেমস বাটলার। এই কোচের সামনেই বাংলাদেশের মেয়েদের লড়াকু মানসিকতার প্রশংসা করলেন চান মিং।
চাইনিজ তাইপের কাছে প্রথম ম্যাচে ৪-০ গোলে হেরে যেন অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সোমবার মাত্র ১ গোল খেয়েছেন শিউলি আজিম, মনিকা চাকমরা। প্রতিপক্ষের জালে গোল দিতে না পারলেও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছে।
দলের এমন পারফরম্যান্সে খুশি কোচ পিটার বাটলার, “আজ ১৫ মিনিটে (আসলে ১৮ মিনিটে) গোল খেয়েছি। কিন্তু এরপর মেয়েরা যেভাবে খেলেছে, যেভাবে পরিকল্পনামতো খেলে ম্যাচের ধারা বদলে দিয়েছে, সেটা সত্যি অসাধারণ। ওরা আসলে ভয় পায়নি এই ম্যাচে। ওদের পারফরম্যান্সে সত্যি খুশি আমি।”
১৪ বছর পর জাতীয় দলের একাদশ থেকে বাদ পড়েন সাবিনা খাতুন। প্রথম দিন চোটের কথা বলেছিলেন কোচ। কিন্তু এদিন সরাসরি কোচ জানিয়ে দেন পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েছেন তিনি, “ সাবিনাকে দেখে আমার মনে হয়েছে সে ভীষণ ক্লান্ত। এ জন্য তাকে পুরো ৯০ মিনিট খেলাইনি। সে খুবই ভালো মেয়ে। দেশের হয়ে অনেক অর্জন তার। কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে যাদের ফর্ম আছে আমি তাদেরকেই বেছে নিয়েছি এই ম্যাচে।”
এরপর তিনি যোগ করেন, “ আমি শৃঙ্খলা, পারফরম্যান্স এসব নিয়ে কাজ করি। দল গড়ার জন্য যাদের জরুরি তাদেরকেই নিয়েছি। আমি একনায়ক নই, আমি শুধু চাই ঠিকমত কাজ করতে, পেশাদারভাবে কাজ করতে। শিউলিকে অধিনায়ক করারটা কৌশলগত সিদ্ধান্ত ছিল, সে দুর্দান্ত খেলেছে।”
প্রথম ম্যাচে বাজে হারের পর কোচ এই ম্যাচে কিছু কৌশলগত পরিবর্তন আনেন। এবং দিন শেষে সেই পরিবর্তন কাজেও দিয়েছে। ম্যাচ শেষে তিনি সেটাই বললেন, “আগের ম্যাচ থেকে কিছু পরিবর্তন এনেছি। আজকের ম্যাচের পরিকল্পনা ছিল ১৫ মিনিট ১৫ মিনিট ধরে ধরে ব্লক করে যাওয়া। চেয়েছি মেয়েদের মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে। শুরুতে গোল হজম করলেও মেয়েরা যেভাবে খেলা পরিবর্তন করেছে, ভয়ডরহীন ভাবে খেলেছে তাতে আমি সন্তুষ্ট।
এই দলে অনেক প্রতিভা আছে বলে মনে করেন পিটার, “বাংলাদেশ যদি মেয়েদের খেলায় উন্নতি করতে চায় তাহলে অনেক প্রতিভা আছে। শৃঙ্খলাটা ঠিক করতে হবে তাহলে। যেটা নিয়ে আমি এখন কাজ করছি।”
শুরুতে একাদশে নীলুফার ইয়াসমিনকে রাখেননি কোচ। কিন্তু আনাই মগিনিকে তুলে তাকে মাঠে নামান ২০ মিনিট পরই। দলে কারও জায়গা যে স্থায়ী নয় সেটাই বলেছেন তিনি, “নীলা (নীলুফার) আজ খেলেছে কিন্তু সে শুরুতে আমার পরিকল্পনায় ছিল না। যদি আপনি ভালো খেলেন, ডিসিপ্লিনড থাকেন তাহলে দলে সুযোগ পাবেন। আমি একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক পরিবেশ তৈরি করতে চাচ্ছি দলের মধ্যে।”
হারলেও দুই ম্যাচের সিরিজ থেকে অনেক ইতিবাচক বিষয় শেখার আছে বলে মনে করেন পিটার, “আপনি কি চাচ্ছেন, ফরাশগঞ্জ, ঢাকা রেঞ্জার্স দলের বিপক্ষে খেলি? কিছু মনে করবেন না, যারা ১৫-১৬ গোল হজম করে। আপনার কি মনে হয়, আমরা এই ম্যাচ থেকে কি শিখলাম? এইটা একটা নতুন শুরু, নতুন প্রক্রিয়া। আপনি যদি আগের মত খেলতে থাকেন তাহলে যাওয়ার কোনও জায়গা থাকবে না। ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কোনও উন্নতি দেখেছেন? না। আপনার প্রশ্নটা নেতিবাচক কিন্তু আমি একজন ইতিবাচক কোচ।”