ওয়াশিংটন ডিসিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর সেই সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত সেনার নাম অ্যারন বুশনেল। ২৫ বছর বয়সী অ্যারন টেক্সাসের সান অ্যান্টেনিওর বাসিন্দা ছিলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অ্যারনের শরীরের আগুন নিভিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।
শরীরে আগুন দেওয়ার আগে অ্যারন বলেছিলেন, “গণহত্যার সঙ্গে আর জড়িত থাকতে চাই না।”
ইসরায়েলের দূতাবাসের দিকে যাওয়ার পথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার শুরু করেন অ্যারন। সেখানে তিনি বলেন, “আমি জানি যে প্রক্রিয়ায় প্রতিবাদ জানাতে যাচ্ছি তা বেশ তীব্র। কিন্তু গাজায় সাধারণ মানুষ যে পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন, তার তুলনায় এটি কিছুই নয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি ঘটনাটির তদন্তে নেমেছে ওয়াশিংটন পুলিশ দপ্তর। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, এক ব্যক্তি দুপুর ১টার দিকে শহরের ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভ, এনডব্লিউয়ের ৩৫০০ ব্লকে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাকে সহযোগিতা করতে পুলিশ সদস্যদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
শুরুতে পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি। তখন বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গুরুতর অবস্থায়’ একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঘটনাটির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে আগুনে পুড়তে পুড়তে এক ব্যক্তিকে ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’ বলে চিৎকার করতে দেখা যায়।
ইসরায়েলি দূতাবাসের এক মুখপাত্র নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, ঘটনায় দূতাবাসের কোনও সদস্য আহত হননি।
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ করার ঘটনা এই প্রথম নয়। গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটির জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ইসরায়েলি কনস্যুলেটের সামনে এক প্রতিবাদকারী নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে নিজেকে দগ্ধ করেছিলেন।
সে সময় পুলিশ বলেছিল, ওই প্রতিবাদকারী পেট্রোল ব্যবহার করেছিলেন। ফিলিস্তিনের একটি পতাকা ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়।
৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায়। এতে এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। একই সঙ্গে সেদিন তারা ২৫৩ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে।
এর জবাবে ওই দিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনও চলছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি।
গাজায় পাঁচ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিবাদে খোদ দেশটির নাগরিকরা বিক্ষোভ করছেন।