Beta
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
অনূর্ধ্ব-২০ সাফ

‘হিমালয়’ ডিঙিয়ে শিরোপার চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের  

অনূর্ধ্ব-২০ সাফের ট্রফি হাতে দুই দলের অধিনায়ক। (বাঁয়ে) বাংলাদেশের অধিনায়ক আশরাফুল হক আসিফ ও  নেপালের কুশাল দেওবা। ছবি: বাফুফে।
অনূর্ধ্ব-২০ সাফের ট্রফি হাতে দুই দলের অধিনায়ক। (বাঁয়ে) বাংলাদেশের অধিনায়ক আশরাফুল হক আসিফ ও নেপালের কুশাল দেওবা। ছবি: বাফুফে।
[publishpress_authors_box]

জাতীয় বা বয়সভিত্তিক-যে কোনও পর্যায়েই সাফের শিরোপা যেন সোনার হরিণ হয়ে গেছে বাংলাদেশের জন্য। জাতীয় দল সর্বশেষ সাফ জেতে ২০০৩ সালে। এরপর কেটে গেছে ২১ বছর। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তোলা হয়নি জামাল ভূঁইয়াদের।

একই অবস্থা বয়সভিত্তিক যুব দলেরও। অনূর্ধ্ব-১৮ পর্যায়ের সাফে দুবার রানার্স আপ হয়েছিল বাংলাদেশ। সেটাও ২০১৭ ও ২০১৯ সালে। সর্বশেষ ২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-২০ সাফের ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পোড়ে বাংলাদেশের যুবারা।

কিন্তু সেই ভারতকে সেমিফাইনালে হারিয়ে এবার চ্যাম্পিয়ন ট্রফির সামনে বাংলাদেশ। হিমালয়ের পাদদেশে কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে বুধবার অনূর্ধ্ব-২০ সাফের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবেন মিরাজুল ইসলামরা। ম্যাচ শুরু হবে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে।    

ফাইনালের আগে অনুশীলনে শেষ বারের মতো নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। ছবি: বাফুফে।

ম্যাচটি হবে নেপালের মাটিতে। ফুটবলপাগল দেশের হাজার হাজার দর্শকদের সামনে খেলতে হবে বাংলাদেশকে। তাছাড়া গ্রুপ পর্বে এই বাংলাদেশকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল নেপাল।

শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ফাইনালে নামার আগে দুটি ‍দুঃসংবাদ পেয়েছে। প্রথমত কোচ মারুফুল হক পাচ্ছেন না তার প্রধান গোলরক্ষক মেহেদি হাসান শ্রাবণকে। ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে গুরুতর চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ৬৯ মিনিটে। চোখের নিচে আঘাত পাওয়ায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু চোট এতটাই গুরুতর যে তাকে যেতে হবে অস্ত্রোপচারের টেবিলে। কাঠমান্ডু থেকে ঢাকায় আনা হয়েছে বসুন্ধরা কিংসের এই গোলরক্ষককে।

দ্বিতীয়ত সেমিফাইনালে সরাসরি লাল কার্ড দেখেছেন বাংলাদেশের সেন্টারব্যাক কামাচাই মারমা আকাই।

অনুশীলনে কোচের কৌশল মনোযোগের সঙ্গে শুনছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। ছবি: বাফুফে।

যদিও শ্রাবণের বদলি হিসেবে মাঠে নেমে টাইব্রেকারে ভারতের দুটি শট ঠেকিয়ে নায়ক বনে গেছেন বদলি গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফ। তাই আসিফকে নিয়ে বাড়তি আত্মবিশ্বাস থাকতেই পারে কোচের।

একই সঙ্গে কাইয়ের বিকল্পও ভেবে রেখেছেন কোচ। সংবাদ সম্মেলনে সেটাই বলেছেন মারুফুল, “ আমাদের সেন্টার ব্যাক কামাচি মারমা আকাই পরের ম্যাচ মিস করবে। যদিও সে বেশ কয়েকটা ম্যাচ খেলেছে এখানে। ওর সঙ্গে ব্যাক ফোরের বেশ ভালো বোঝাপড়া ছিল। তবে তার জায়গায় যে আসবে আশা করি সে অভিজ্ঞ এবং একজন পেশাদার ফুটবলার হিসেবে সে এটা ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পারবে। ”

 প্রতিপক্ষ হিসেবে নেপালকে বেশ সমীহই করছেন মারুফুল। তারপরও চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতেই চোখ দেশের একমাত্র উয়েফা প্রো লাইসেন্সধারী কোচের, “নেপালের সঙ্গে আগে যেভাবে খেলেছি তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে যদি তখন তাদের ৮০ ভাগ শক্তি নিয়ে আসে তাহলে ফাইনালে তারা শতভাগ শক্তি নিয়ে আসবে। এবং তাদের কৌশলে হয়তো কিছুটা বদল আসবে। যেহেতু ওই ম্যাচটা আমরা হেরেছিলাম (গ্রুপ পর্বে), তাই ফাইনালে যে আমরা তাদের হারাতে পারব না এটা এমন না। আমরাও যদি শতভাগ শক্তি নিয়ে নামি ও কৌশলে কিছু বদল আনি তাহলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব।”

সাফের ট্রফি খরা কি কাটাতে পারবে বাংলাদেশ? ছবি: বাফুফে।

যেহেতু নেপালের ঘরের মাঠে খেলা, তাই সব দিক দিয়েই এগিয়ে থাকবে নেপাল। কিন্তু তারপরও নেপালকে হারানো সম্ভব। এমনটাই মনে করেন মারুফুল, “প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত যেভাবে খেলেছি তাতে আমরা ভালোই করেছি। এটা সত্যি এখানে উত্থান পতন হয়েছে আমাদের। কিন্তু এখনও বিশ্বাস করি আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ আছে। আমি জানি নেপাল শক্ত প্রতিপক্ষ। আর তাছাড়া ওরা ঘরের মাঠে খেলবে। ওদের বেশিরভাগ ফুটবলার এখানে এই মাঠে খেলে বেড়ে উঠেছে। এই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। তারপরও আমি বিশ্বাস করি যদি আমরা আমাদের প্লান ও কৌশল নিয়ে খেলতে পারি তাহলে আমরা চ্যাম্পিয়ন হবো।”

কোচের সুরেই কথা বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আশরাফুল হক আসিফ, “আমাদের দলে গোলরক্ষক শ্রাবণ নেই। ওর জায়গায় আসিফ এসেছে। ও ভালো ফুটবলার। এছাড়া আকাইয়ের বদলে যে আসবে সেও অভিজ্ঞ। আশা করি কোনও সমস্যা হবে না। জানি নেপালের অনেক গতিময় ফুটবলার আছে। তারপরও আমরা ওদের হারাতে চাই।”

নেপালের যেমন আছে গতিময় ফুটবলার। বাংলাদেশেরও তেমনি মিরাজুল ইসলাম, পিয়াস আহমেদ নোভা ও আসাদুল মোল্লা আছেন। মিরাজুল ২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় আছেন। তাছাড়া আক্রমণভাগে রাব্বি হোসেন রাহুল ও মিরাজুল জুটির রসায়নটা এবারের সাফে ভালোই মিলেছে। ফাইনালে এদের কেউ জ্বলে উঠলে কে জানে ট্রফি নিয়েই হয়তো দেশে ফিরবে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত