তারকা খ্যাতির বিচারে কে বেশি এগিয়ে? সুনীল ছেত্রী নাকি হামজা দেওয়ান চৌধুরী?
একজনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। অন্য জন পুরো বিশ্বের মধ্যে আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজের জার্সিতে সর্বোচ্চ গোল করেছেন। সব মিলিয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতা একজন।
প্রথমজন হামজা চৌধুরী। অন্য জন ভারতীয় কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রী। হামজার হয়তো আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিজ্ঞতা কম। কিন্তু ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তাকে সামলাতে হয় মো সালাহ, ডি ব্রুইনাদের মতো তারকাদের।
শিলংয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ের মধ্যে আরেকটা লড়াইও দেখা যাবে। ইংল্যান্ড প্রবাসী হামজা ও ভারতের ৪০ বছর বয়সী তারকা সুনীল ছেত্রির মধ্যের দ্বৈরথ দেখার জন্য নিশ্চয় ফুটবলপ্রেমীরা তাকিয়ে থাকবে।
সাদা চোখে দেখলে মাঠে দুজন দুই পজিশনের ফুটবলার। হামজা খেলেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে। আর সুনীল ছেত্রী স্ট্রাইকার। সুনীল ছেত্রী আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ৯৫ গোল করেছেন। তার ওপরে পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি ও ইরানের আলী দাইয়ি আছেন।
ওদিকে হামজা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটির হয়ে ৯১ ম্যাচে খেলেছেন। তবে গোল নেই নামের পাশে। মাত্র ১ গোল। যদিও গোলের মানদন্ডে তাকে মাপা ঠিক হবে না। তিনি এফএ কাপ চ্যাম্পিয়ন দলে খেলেছেন।
আসলে জাতীয় দলের জার্সিতে ১৫২ ম্যাচ খেলা সুনীল ছেত্রীর বড় অস্ত্র ফিটনেস। ভারতের আক্রমণভাগের মূল অস্ত্র বলা যায় সুনীল ছেত্রী। বল পজিশনে দক্ষতা আর নিখুঁত ফিনিশার হিসেবে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। বাংলাদেশের বেশিরভাগ ম্যাচে হৃদয় ভেঙেছেন সুনীল ছেত্রী।
হামজা অবশ্য ট্যাকলিং, স্টামিনা ও আক্রমণ প্রতিহত করার দক্ষতায় ক্লাবের জার্সিতে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ম্যাচের গতি নিয়ন্ত্রণ আর সতীর্থকে বল জোগান দেওয়া মূল কাজ হওয়ায় হামজার নামের পাশে গোল সংখ্যা সেভাবে নেই।
একইভাবে ফিটনেসে এগিয়ে আছে হামজাও। বাংলাদেশের সব ফুটবলপ্রেমীর নজর থাকবে তাই হামজার দিকে। গত কয়েক দিনে এক ছাদের নিচে থাকা হামজা সতীর্থদের সঙ্গে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে অতীতের লড়াইয়ের গল্প শোনা হামজা ভালো করেই জানেন, তাকে কী সামলাতে হবে।
তাঁর সামনে যে সুনীল ছেত্রীর মতো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ভারতীয় কিংবদন্তিকে থামানোর চ্যালেঞ্জ। দুই বড় তারকার লড়াইয়ের আগে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে সেরার বিতর্ক। হামজা এখনও বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচ না খেললেও স্কিল দক্ষতার কারণে ছেত্রির সঙ্গে তাঁর তুলনা শুরু হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা সেই তুলনায় না গিয়ে হামজা ও সুনীল ছেত্রীর প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমার মনে হয়, হামজা ও সুনীলের ফিরে আসা আরও বেশি রোমাঞ্চকর হতে চলেছে। এটি সত্যিই খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাময় ম্যাচ হতে চলেছে। তবে এটা শুধু তাদের নিয়েই হবে না, নিশ্চিতভাবে। আমরা যদি আগামীকাল (আজ) জিততে পারি, তবে সেটা শুধু হামজার জন্য হবে না। হামজা অবশ্যই আমাদের জন্য ভালো, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমার মনে হয়, সুনীলের ফিরে আসা ভারতকে শক্তিশালী করেছে। যে জিতুক না কেন, সেটা দলের জন্য হবে।”