ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
সংগঠনটির উপপ্রধান শেখ নাইম কাসেম জানিয়েছেন, তাদের শীর্ষ নেতা এবং অনেক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েলি স্থল হামলার মোকাবেলা করবেন তারা।
সোমবার এক ভিডিওবার্তায় তিনি এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “ইসরায়েল হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করতে পারেনি।”
গত দেড় সপ্তাহ ধরে লেবাননে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর অবস্থানগুলোতে ভয়াবহ বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। চলমান এই হামলায় গত শুক্রবার হিজবুল্লাহপ্রধান শেখ হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হন।
এছাড়া হিজবুল্লাহর আরও বেশ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারসহ এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লক্ষাধিক। তবুও হিজবুল্লাহর উপপ্রধান শেখ নাইম কাসেম জোর দিয়ে জানান, তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন।
কাসেম বলেছেন, হিজবুল্লাহ অচিরেই সংগঠনের যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজন নতুন নেতা নির্বাচন করবে। এরমধ্যেই একজনকে নতুন নেতা হিসেবে পছন্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিমান হামলার পাশাপাশি লেবানন সীমান্তের কাছে সামরিক সরঞ্জামাদিসহ সৈন্যসংখ্যাও বাড়াচ্ছে ইসরায়েল। ফলে লেবাননে ইসরায়েলের সম্ভাব্য স্থল হামলার শঙ্কা বাড়ছে।
লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর বিপুল সেনা, ট্যাংক ও কামান মোতায়েন করতে দেখা গেছে।
নাইম কাসেম ঘোষণা করেন, “আমরা বেশ প্রস্তুত, ইসরায়েলিরা যদি স্থলভাগে অনুপ্রবেশ করতে চায়, তাহলে আমাদের প্রতিরোধ বাহিনী প্রস্তুত। লেবাননে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ও গণহত্যার মাধ্যমে ইসরায়েলের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্য থাকা সত্ত্বেও হিজবুল্লাহ তার মূল লক্ষ্য থেকে সরবে না।”
তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েল লেবাননের সব এলাকায় গণহত্যা চালাচ্ছে যতক্ষণ না সেখানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের চিহ্ন ছাড়া কোনও ঘর অবশিষ্ট না থাকে। ইসরায়েল বেসামরিক, অ্যাম্বুলেন্স, শিশু ও বৃদ্ধদের ওপরও হামলা করছে। তারা যোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে না, বরং গণহত্যা করে।”
কাসেম যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকারও সমালোচনা করেছেন। দেশটিকে তিনি ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সীমাহীন সামরিক সহায়তার মাধ্যমে- সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, আর্থিকভাবে’ অংশীদার বলে অভিহিত করেছেন।
ভিডিওবার্তাটি শেষ করার সময় হিজবুল্লাহর উপপ্রধান বলেন, “আমরা জিতব, যেভাবে আমরা ২০০৬ সালে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিতেছিলাম।”
এদিকে, রবিবার ইয়েমেনের হুতিদের লক্ষ্য করেও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক সংঘাত সৃষ্টির শঙ্কা বাড়ছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা