Beta
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

টেনিসে বাংলাদেশি মাসফিয়ার নতুন ইতিহাস

বাংলাদেশের প্রথম নারী রেফারি হিসেবে আইটিএফ হোয়াইট ব্যাজ পেলেন মাসফিয়া আফরিন। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অর্জনের স্মারক হাতে। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশের প্রথম নারী রেফারি হিসেবে আইটিএফ হোয়াইট ব্যাজ পেলেন মাসফিয়া আফরিন। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অর্জনের স্মারক হাতে। ছবি: সংগৃহীত।
[publishpress_authors_box]

গ্র্যান্ড স্লাম পরিচালনার স্বপ্ন দেখেন আন্তর্জাতিক টেনিসে প্রথম বাংলাদেশি নারী রেফারি মাসফিয়া আফরিন।

আর গ্র্যান্ড স্লাম পরিচালনার প্রথম শর্তই হলো তাকে হতে হবে হোয়াইট ব্যাজধারী রেফারি। সেই স্বপ্ন পূরণের সিঁড়ির প্রথম ধাপে অবশেষে পা রেখেছেন মাসফিয়া।

রবিবার আইটিএফ (আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশন) হোয়াইট ব্যাজ রেফারির স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম কোনও রেফারি হিসেবে যিনি এমন বড় স্বীকৃতি পেলেন।

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ২৪-২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে আইটিএফ হোয়াইট ব্যাজ স্কুল। যেখানে অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন মাসফিয়া।

এর মানে আইটিএফের জুনিয়র, বয়সভিত্তিক, সিনিয়র টুর্নামেন্ট, বিশ্ব টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপ, মাস্টার্স টুরসহ ভবিষ্যতে গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টও পরিচালনা করতে পারবেন তিনি।

মাসফিয়ার হোয়াইট ব্যাজ কোর্স করতে মালয়েশিয়ায় যাওয়া আসার বিমানভাড়া সহ আনুষঙ্গিক বিষয়ের সব স্পনসর বহন করেছেন বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সভাপতি  নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সহ সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম।  

এই কোর্সে বাংলাদেশের মাসফিয়া আফরিন ছাড়াও মালয়েশিয়া, ইরাক, ইরান, লেবানন, উজবেকিস্তান, ভারত, জাপান, ভিয়েতনাম, কাজাখস্তান, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও চায়না হতে ১৬ জন অফিসিয়াল অংশগ্রহণ করেন।

সতীর্থ রেফারি ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাসফিয়া। ছবি: সংগৃহীত।

হোয়াইট ব্যাজ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগে মাসফিয়া আইটিএফ এর ‘প্রজেক্ট : অফিসিয়েটিং পাথওয়ের আওতায় অফিসিয়েটিংয়ে বিষয়ে অভিজ্ঞতা নিতে কলকাতা ও দিল্লিতে দুটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সহকারি রেফারির দায়িত্ব পালন করেন।

এর আগে বাংলাদেশের সারোয়ার মোস্তফা জয় ২০০০ সালে আইটিএফ হোয়াইট ব্যাজ চেয়ার আম্পায়ারের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।

এমন বড় অর্জনে স্বাভাবিকভাবেই খুশি মাসফিয়া। মালয়েশিয়া থেকে সকাল সন্ধ্যাকে তিনি জানান, ““শেষ পর্যন্ত হোয়াইট ব্যাজ রেফারি হতে পেরে স্বস্তি লাগছে একটু। এটা শুধু আমার একার সাফল্য না। এই সাফল্য বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের। ভারতীয় রেফারি অভিষেক মুখার্জীকে ধন্যবাদ যিনি আমাকে এ বিষয়ে অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন এটা পেতে।”

মাসফিয়ার আম্পায়ারিংয়ের হাতেখড়ি শুরু গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জুনিয়র বিশ্ব টেনিস সিরিজে। সেবার ওই টুর্নামেন্টে ম্যাচ পরিচালনা করে ইতিহাসের অংশ হয়েছিলেন তিনি।

জাতীয় দলের খেলোয়াড় মাসিফয়া ২০১০ সাল থেকে জাতীয় ও বয়সভিত্তিক একাধিক আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলেছেন। সেই অভিজ্ঞতা তো ছিলই। এরপর রেফারিংয়ের লেভেল ওয়ান কোর্স করেন ২০২২ সালে। এছাড়া আইটিএফ (আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশন) অনূর্ধ্ব-১৪ ডেভেলপমেন্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে সহকারী রেফারি ছিলেন মাসফিয়া।

দশ বছরের খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারে অনূর্ধ্ব-১০, অনূর্ধ্ব-১২, অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মাসফিয়া। মেয়েদের জাতীয় র‍্যাঙ্কিংয়ে ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে। প্রথম মেয়ে হিসেবে আইটিএফ ডেভলপমেন্ট বৃত্তি নিয়ে উজবেকিস্তানে খেলেছেন তিনি।

হোয়াইট ব্যাজের স্মারক ও সার্টিফিকেট হাতে মাসফিয়া। ছবি: সংগৃহীত।

মাসফিয়া খেলেছেন মালেয়িশয়ায় অনুষ্ঠিত বিলি জিন কিং কাপের জুনিয়র টুর্নামেন্টে। এ ছাড়া নেপালে অনুষ্ঠিত আইটিএফ অনূর্ধ্ব-১২ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে আর ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও ভারতে খেলেছেন আইটিএফ অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপে। শ্রীলঙ্কায় খেলেছেন বিশ্ব জুনিয়র টেনিস টুর্নামেন্টে।

কাঁধের চোটের কারণে খেলা ছেড়ে রেফারিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখা মাসফিয়া এখন হয়ে গেলেন পুরো দস্তর পেশাদার।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত