Beta
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

গ্র্যান্ডমাস্টারের স্বপ্ন বোনা সাকলাইনের সামনে যত বাধা  

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অর্থ পুরস্কার নিচ্ছে সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ । ছবি: সংগৃহীত
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর অর্থ পুরস্কার নিচ্ছে সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ । ছবি: সংগৃহীত
[publishpress_authors_box]

কৈশোরের সারল্য চোখে মুখে সাকলাইন মোস্তফা সাজিদের। বয়স আর কতই বা হবে? মাত্র ১৩! জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন সাকলাইন বুধবার আরও একটি ঘরোয়া টুর্নামেন্টে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। জুলাই গণ অভ্যূত্থান ‍উপলক্ষ্যে আয়োজিত দাবা ‍টুর্নামেন্টে বুধবার এক রাউন্ড বাকি থাকতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সাকলাইন। শেষ পর্যন্ত ৭ রাউন্ডে সব কটি ম্যাচই জিতেছে তিতাস ক্লাবের ফিদে মাস্টার।  

এই ‍টুর্নামেন্টে সাকলাইন হারিয়েছে তার চেয়ে বেশি রেটিংয়ের শক্তিশালী তিন প্রতিপক্ষ মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ, সুব্রত বিশ্বাস ও তাহসিন তাজওয়ারকে।

বাংলাদেশের দাবায় প্রতিভাবান দাবাড়ু আসে। কিন্তু সেই প্রতিভার মূল্যায়ন কি আদৌ হয়? হয় না বলেই ষষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টারের আক্ষেপ ঘুরে ফিরে আসে দাবা অঙ্গনে।

বাংলাদেশের সর্বশেষ গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব। ২০০৮ সালে তিনি পেয়েছিলেন জিএম নর্ম। এরপর প্রায় ১৭ বছর কেটে গেলেও আরেকজন গ্র্যান্ডমাস্টার তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন। সাকলাইন হতে চায় সেই ষষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার।

ফিদে মাস্টার সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ। ছবি: বদিউজ্জামান মিলন

কিন্তু কোনও অনুশীলন ছাড়াই কি সেটা সম্ভব? অথচ গত কয়েক বছর যে সব আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে সাকলাইন সবগুলোই কোচ ছাড়া। কোনও অনুশীলন ছাড়া। ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ- এমনকি গত জুনে সর্বশেষ দুবাই ওপেনেও খেলেছে কোচ ছাড়াই। অনুশীলন ছাড়াই। অথচ অনুশীলন ছাড়াই খেলে দুবাইয়ের বি ক্যাটাগরিতে ষষ্ঠ হয়ে জেতে ১০০০ ইউএস ডলার পুরস্কার।

সাকলাইনের বাবা আবুল কালাম আজাদ বলছিলেন, “ও যথেষ্ট মেধাবী। ওর যেটা প্রয়োজন সেটা হলো ট্রেনিং। অন্তত ছয় মাসের ট্রেনিংও যদি করানোর ব্যবস্থা করা যেত।”

একই আক্ষেপ সাকলাইনের কন্ঠেও, “আমার ট্রেনিংয়ের খুব প্রয়োজন। ট্রেনিং করে কোথাও খেলতে গেলে খুব ভালো রেজাল্ট হতো। আমি আসলে নিজের চেষ্টায় খেলে যাচ্ছি। প্রতিদিন ৬ ঘন্টা একা একা অনুশীলন করি। এটা যথেষ্ট না।”

সাকলাইনের বর্তমান ফিদে রেটিং স্ট্যান্ডার্ড দাবায় ২২০৪। প্রথমে আন্তর্জাতিক মাস্টার, এরপর ধাপে ধাপে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সে, “আমি এখন দেশের ষষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার হতে চাই।”

দাবার বোর্ডে মগ্ন সাকলাইন।

কিন্তু চাইলেই কি সম্ভব? পাশের দেশ ভারতে দিব্যা দেশমুখ সম্প্রতি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তার উদহারণ টেনে সাকলাইন বলেন, “ওরা অনেক সুযোগ সুবিধা পায়। ওদের স্পনসরও থাকে। ওদের মতো সুযোগ ‍সুবিধা ও ট্রেনিং পেলে আমিও দ্রুতই গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পারবো।”

আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়ার আগে বেশির ভাগ সময় স্পনসর জটিলতায় ভোগে সাকলাইন। তবে সর্বশেষ টুর্নামেন্টে দুবায়ে যেতে তাকে সহযোগিতা করেন তিতাস ক্লাবের কর্মকর্তা কাজী সাইদ হাসান।

রাজারবাগ পুলিশ লাইন স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রের একটাই স্বপ্ন গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া। সাকলাইন বলে যায়, “ফেডারেশন সাপোর্ট করলে দ্রুতই হয়তো জিএম হতে পারব।”

দাবা ফেডারেশনের কর্মকর্তারা কি সাকলাইনদের মত তরুণ প্রতিভার কথা শুনতে পান?

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত