ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও বাংলাদেশে ফিরবেন, এমন প্রত্যাশার কথা বললেন ঢাকা-৭ আসনের সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম।
এমন সময় সোলায়মান সেলিম একথা বলেছেন যখন একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তাকে তোলা হচ্ছিল এজলাসে।
বৃহস্পতিবার যুবদল নেতা শামীম হত্যা ঢাকা-৭ আসনের সাবেক এই এমপির চার দিনের রিমান্ড শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালতে তোলেন তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল জোনাল টিমের উপপরিদর্শক ফেরদৌস জামান। একই মামলায় আদালতে তোলা হয়েছিল সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামকেও।
যখন এজলাসে তোলা হচ্ছিল তখন আদালত কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিক ও অন্যদের উদ্দেশে সোলায়মান সেলিম বলেন, “শেখ হাসিনা আবারও ফিরে আসবেন, দেশের অবস্থা ভালো না।
“সরকার দু’বেলা ভাত খায়, কিন্তু দেশের মানুষ দু’বেলা ভাত পায় না।”
এই পর্যায়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে কথা বলতে নিষেধ করেন। একজন সোলায়মান সেলিমের মাথার হেলমেটের সামনের ফেইস শিল্ডটি নিচে নামিয়ে দেন।
তখন সোলায়মান সেলিম বলেন, “আমার মুখ যতই চাপিয়ে রাখার চেষ্টা করুক, মুজিববাদীরা মুজিব আদর্শ কখনেও ভুলবে না।”
রিমান্ড শেষে সোলায়মান সেলিম ও কামরুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছিল পুলিশ।
শুনানিতে সোলায়মান সেলিমের পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী প্রাণনাথ। তিনি বলেন, “পুলিশের প্রতিবেদনে এমন কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই যে সোলায়মান সেলিম সম্পৃক্ত ছিলেন। তাছাড়া ঘটনার সময় তিনি দলীয় কোনও পদে ছিলেন না।”
পরে কামরুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করার জন্য ডাকা হয়। তবে কামরুল ইসলাম তার আইনজীবীকে শুনানি করতে দেননি।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধীতা করেন। তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসররা এখনো সক্রিয়। জামিন পেলে অশান্তি সৃষ্টি করবে। শান্তি নষ্ট করবে।”
শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর তাদের আবারও কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে বেলা ২ টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাদের সিএমএম আদালতের হাজতখানা থেকে বের করা হয়। পুলিশ সদস্যরা তাদের সিঁড়ি দিয়ে ৪র্থ তলায় ওঠানোর চেষ্টা করেন। তখনন কামরুল ইসলাম দাঁড়িয়ে যান। তিনি বলেন, “হাঁটতে পারব না। চারতলায় উঠতে পারব না। লিফট আছে না। লিফটে উঠায়ে দেন।”
পরে তাদের লিফটের কাছে নেওয়া হয়। তখন আবার সোলায়মান সেলিম লিফটে উঠতে চাননি। পরে অবশ্য লিফটে করেই দুজন ওপরে ওঠেন।
যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকা হয়। মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়।
এই মামলায় কামরুল ইসলাম ও সোলায়মান সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর এই মামলায় তাদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন বিচারক।



