ওয়াশিংটন ডিসি একশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্কমাত্রা নিয়ে বুধবার সকালে জেগে ওঠে। আর বন্ড মার্কেট থেকে আসতে থাকে সতর্ক সংকেত— প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈশ্বিক বাণিজ্য পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা আরও বড় সঙ্কট ডেকে আনতে পারে।
ট্রাম্পের উপদেষ্টারা তখনও আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছিলেন। তারা বলছিলেন, বিশ্ব অর্থনীতিকে নতুনভাবে গঠনের এবং বহু দশকের বিশ্বায়নের প্রক্রিয়াকে বদলে দেওয়ার এই পরিকল্পনাটি ভুল হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এমনকি এসঅ্যান্ডপি ৫০০-এর মান এক সপ্তাহে ১২ শতাংশ কমে যাওয়া সত্ত্বেও তারা এই মনোভাব বজায় রাখেন।
হোয়াইট হাউসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ওয়াল স্ট্রিট মেইন স্ট্রিটকে বোঝে না, আর মেইন স্ট্রিট এখনও প্রেসিডেন্টকে সমর্থন দিচ্ছে।
তবে কয়েক ঘণ্টা পরেই ট্রাম্প কিছুটা পিছু হটলেন। তিনি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও বাড়ালেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের ওপর আরোপ করা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এরপরই শেয়ারবাজার দ্রুত ঊর্ধ্বমুখী হয়।
ট্রাম্প তখন খুশি হয়ে তার সোশাল মিডিয়া ট্রুথ সোশালে এক পোস্টে বলেন, “লোকজন বলছে, এটা নাকি আর্থিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দিন।”
আগের শুল্কনীতিকে নীতিকে উল্টে দেওয়ার ঘোষণার মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যেই এ মন্তব্য করেন তিনি।
এই ঘটনাপ্রবাহ ছিল বেশ বিস্ময়কর। কারণ এর আগের কয়েকদিন ট্রাম্পের সহকারীরা জোর গলায় বলছিলেন, তিনি বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনর্গঠনের একটি বড় পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার বিকাল পর্যন্ত ট্রাম্প এবং তার বাণিজ্য উপদেষ্টারা বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান সংসদ সদস্য ও শীর্ষ বিদেশি নেতার সঙ্গে কথা বলেন। তারা বৈশ্বিক বাজারের দুরবস্থা ও সম্ভাব্য মন্দা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ট্রাম্পকে কিছু ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।
বুধবার বিকেলের দিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, তিনি গত কয়েক দিন ধরেই নিজের নীতি পরিবর্তনের বিষয়ে চিন্তা করছিলেন।
তিনি বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি সম্ভবত বুধবার সকালেই নেওয়া হয়। খুব সকালেই তিনি নিজে সিদ্ধান্তটি লিখে ফেলেন। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, “আমাদের কাছে সেদিন আইনজীবীদের সাহায্য ছিল না। আমরা নিজেরাই এটা হৃদয় থেকে লিখেছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই বিষয়টি নিয়ে আমরা কিছুদিন ধরেই আলোচনা করছিলাম। আজ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সঠিক সময়। আমরা তা নিয়েছি, এবং আমরা এতে সন্তুষ্ট।”
এই সিদ্ধান্তের পেছনে মঙ্গলবার রাতেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে।
ফক্স নিউজের রাত ৯টার ‘সন হ্যানিট’ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর ট্রাম্প প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ফোনে কয়েকজন রিপাবলিকান সেনেটরের সঙ্গে কথা বলেন। এই সেনেটরদের মধ্যে অনেকেই ওই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
সূত্র অনুযায়ী, কিছু সেনেটর শুল্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। সেদিন রাতে ট্রাম্প বন্ড মার্কেটও পর্যবেক্ষণ করছিলেন, যেখানে পরিস্থিতি বেশ অস্থির হয়ে উঠেছিল। পরে তিনি বলেন, “অনেকেই সেখানে ঘাবড়ে যাচ্ছিল।”
অনুষ্ঠানের শেষ বিরতির আগেই লুইজিয়ানার সেনেটর জন নিলি কেনেডি হ্যানিটিকে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে সরাসরি ১৫ সেকেন্ড কথা বলতে চান। কারণ দক্ষিণ ক্যারোলাইনার সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম তাকে জানিয়েছিলেন, ট্রাম্প অনুষ্ঠানটি দেখছেন।
হ্যানিটির সেই আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সেনেটর জন থুন (সাউথ ডাকোটা), টিম স্কট (দক্ষিণ ক্যারোলাইনা), কেটি বয়েড ব্রিট (আলাবামা), টম কটন (আরকানসাস), টেড ক্রুজ (টেক্সাস) ও মার্কওয়েন মুলিন (ওকলাহোমা)।
এই সেনেটরদের কেউ কেউ প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেন, তিনি যেন শুল্ক ইস্যুতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। অনুষ্ঠানের পর অনেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, তিনি ট্রাম্পকে বলেছিলেন, “আপনি ঠিক করবেন কোনটা যথেষ্ট, কোনটা নয়। তবে এখন সবাই কিছু ইতিবাচক ফল দেখতে চাচ্ছে।”
সেনেটর টেড ক্রুজ বলেন, তিনি ট্রাম্পকে দুটি পথের কথা বলেন। এর একটি, শুল্ককে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে অন্য দেশগুলোকে তাদের শুল্ক কমাতে রাজি করাতে পারেন ট্রাম্প। অন্যটি, যদি ট্রাম্প আগের মতোই উচ্চ শুল্ক বজায় রাখেন, তবে অন্য দেশগুলো পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে।
টেড ক্রুজ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছি, অন্য দেশগুলো পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে সেটা আমাদের দেশের জন্য খুব খারাপ হবে। টেক্সাসের জন্যও বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।”
টেক্সাসের এই সেনেটর জানান, তিনি প্রেসিডেন্টকে উৎসাহ দিয়েছেন যেন দ্রুত এক বা একাধিক বড় বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনা শুরু করেন। এই পরামর্শ তিনি ‘হ্যানিটি’ অনুষ্ঠানেও দিয়েছিলেন।
ক্রুজ বলেন, তিনি আশা করেন এই আলোচনাগুলো ট্রাম্পকে প্রভাবিত করেছে। প্রেসিডেন্টের বুধবারের সিদ্ধান্ত তার এবং অন্যদের আহ্বানের সঙ্গে মিলেছে বলেই মনে করেন তিনি।
বুধবার সকালে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেনেটর জন থুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ফোনে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট কারিন কেলার-সুটারের সঙ্গে কথা বলেন।
সুইজারল্যান্ড থেকে আসা রোলেক্স ঘড়ি ও চকলেটের ওপর হঠাৎ করে ৩১ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়, যা দেশটির অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্রেসিডেন্ট কেলার-সুটার ট্রাম্পকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি যেন এই কঠোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন। ২৫ মিনিটের ফোনালাপে তিনি উল্লেখ করেন, সুইস ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে।
তিনি আরও জানান, গত বছর সুইজারল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পজাত পণ্যের ওপর শুল্ক তুলে দিয়েছে। (যদিও একটি সূত্র জানায়, থুনের হোয়াইট হাউসে উপস্থিতি শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে ছিল না।)
সেই সকালেই ট্রাম্প ফক্স নিউজে ব্যাংকিং জায়ান্ট জে.পি. মরগান চেজের প্রধান নির্বাহী জেমি ডাইমনকে একটি সাক্ষাৎকার দিতে দেখেন। ডাইমন বলেন, চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে মন্দা আসা “সম্ভাব্য”। তিনি বলেন, যাদের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন, তাদের অধিকাংশই ব্যয় কমিয়ে দিচ্ছেন।
ডাইমন বলেন, “আমি পরিস্থিতিকে ঠান্ডা মাথায় দেখছি। কিন্তু যদি আমরা অগ্রগতি না করি, তাহলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।”
এর কিছুক্ষণ পরেই ট্রাম্প ট্রুথ সোশালে এক পোস্ট করে সবাইকে বলেন, “শান্ত থাকুন, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।” এরপর আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, “এখন কেনাকাটার জন্য চমৎকার সময়।”
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক ট্রাম্পের উপস্থিতিতে যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ বাণিজ্য কর্মকর্তা মারোশ সেফচোভিচের ফোন ধরছিলেন, ঠিক তখনই ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্কের জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে।
এই পাল্টা শুল্কের লক্ষ্য ছিল ট্রাম্পের সমর্থকদের বিভিন্ন শ্রেণি— যেমন সয়াবিন কৃষক ও প্লাস্টিক পণ্যের উৎপাদকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক ক্রেতা ইউরোপীয় নেতারা বৃহত্তর প্রতিশোধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বুধবার। তবে একইসঙ্গে তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে যতটা সম্ভব শুল্ক হ্রাস করে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টাও করছিলেন।
দুপুরের দিকে লুটনিক এবং ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে বসে এমন একটি নীতি পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করছিলেন, যা তার নিজের দলের কিছু সদস্যকেও অবাক করে।
ট্রাম্প যখন তার প্রেসিডেন্সির “সবচেয়ে অসাধারণ ট্রুথ সোশাল পোস্টগুলোর” একটি তৈরি করছিলেন, তখন ওই দুই ব্যক্তি তার সঙ্গে বসেছিলেন। লুটনিক বুধবার দুপুর দেড়টায় সোশাল মিডিয়া এক্সে এই তথ্য পোস্ট করেন, ট্রাম্পের ঘোষণা প্রকাশের মাত্র ১২ মিনিট পর।
আংশিক শুল্ক প্রত্যাহার ঘোষণার এক ঘণ্টারও বেশি পর হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে নাসকার চ্যাম্পিয়নদের সামনে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি, মানুষ একটু বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল। তারা অস্থির হয়ে উঠছিল। এখনও কিছু শেষ হয়নি। কিন্তু আমরা অন্যান্য দেশ থেকে বিপুল সমর্থন পাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন কিছু করতে যাচ্ছি, যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।”
এই ঘোষণার পর ট্রাম্পের উপদেষ্টারা দ্রুত ব্যাখ্যা দিতে শুরু করেন যে, এই নীতিগত পরিবর্তন আসলে তাদের পূর্বপরিকল্পনারই অংশ ছিল।
প্রেসিডেন্টের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার এক্সে লেখেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অসাধারণ কৌশল, সাহসী নেতৃত্ব ও সূক্ষ্ম পরিকল্পনা মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে এমনভাবে সংস্কার করেছে, যা অন্যরা কয়েক দশকেও পারেনি। একই সঙ্গে তিনি অর্থনৈতিক আগ্রাসনের মূল পরিকল্পনাকারী চীনকে আন্তর্জাতিকভাবে আলাদা করে দিয়েছেন।”
হোয়াইট হাউসের অনেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও এই হঠাৎ সিদ্ধান্তে বিস্মিত হন। ট্রাম্প যখন ট্রুথ সোশালে শুল্ক ‘বিরতির’ ঘোষণা দেন, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই উপদেষ্টারা দ্রুত বৈঠকে বসেন এবং সিদ্ধান্ত নেন কীভাবে সামনে এগোবেন। দ্রুতই তারা অর্থমন্ত্রী বেসেন্ট ও প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটকে নিয়ে বাইরে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
বাণিজ্য আলোচনায় গভীরভাবে জড়িত একজন উচ্চপদস্থ বিদেশি কূটনীতিক ট্রাম্পের ঘোষণা পোস্ট করার মুহূর্তেই একজন সাংবাদিকের টেক্সট বার্তা থেকে এই নীতি পরিবর্তনের খবর পান। সংবেদনশীল আলোচনা সম্পর্কে খোলাখুলি বলার জন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কূটনীতিক আরও বিস্তারিত জানার জন্য তড়িঘড়ি করে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন।
ট্রাম্পের পোস্টের পর হোয়াইট হাউসের সহকারীরা বৈঠকে বসে নতুন পরিকল্পনার বিষয়বস্তু ও ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন। তবে সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরও হোয়াইট হাউসের অনেক কর্মকর্তার কাছেই পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো স্পষ্ট ছিল না।
সাংবাদিকরা জানার চেষ্টা করছিলেন- কানাডা ও মেক্সিকোর ওপরও কি নতুন ১০ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য হবে, যেমনটি বেসেন্ট সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন? অথচ এই দেশগুলো ট্রাম্পের আগের সপ্তাহের “লিবারেশন ডে” পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
বুধবার সকালে যখন ট্রাম্প সোশাল মিডিয়ায় কোনও ঘোষণা দেননি তখন হোয়াইট হাউসের মূল কর্মসূচির মধ্যে ছিল নাসকার চ্যাম্পিয়নদের অভ্যর্থনা জানানো এবং বিকালে কিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করা।
কিন্তু যখন পশ্চিম উইংয়ে টেলিভিশন স্ক্রিনে উদ্বেগজনক অর্থনৈতিক খবর ভেসে ওঠে, তখন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে বসে ঘোষণা তৈরির ভাষা চূড়ান্ত করেন।
ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো। তিনি বরাবরই আগ্রাসী শুল্ক নীতির পক্ষে ছিলেন। তিনি কিন্তু ওই আলোচনায় অংশ নেননি। এটি ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে, হয়তো তার দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব কমে আসছিল। এমনকি বেসেন্ট ও প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট ট্রাম্প ও লুটনিকের যৌথ কাজ নিয়ে আলোচনা করলেও নাভারোর নাম উল্লেখ করেননি।
যদিও আগে থেকে জানা ছিল, বেসেন্ট ও নাভারো শুল্ক বিষয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করতেন। তবে ট্রাম্পের উপদেষ্টারা বারবার বলেছেন, তারা সবাই প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন।
বুধবার ওয়েস্ট উইংয়ে নাভারোকে দেখা গেলেও তিনি ওভাল অফিস আলোচনায় না থেকে হোয়াইট হাউসের বাইরে ফক্স বিজনেস চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকার দেন।
সেখানে তিনি পুরো ঘটনাকে “একটি চমৎকার আলোচনা” বলে অভিহিত করেন। সাক্ষাৎকারের পর উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান। তবে সাক্ষাৎকারে বলেন, তাকে কোনোভাবে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে না।
নাভারো বলেন, “আমরা একসঙ্গে দারুণভাবে কাজ করছি। স্কটি আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজন, আমরা বহু বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করছি… আমরা সবাই প্রেসিডেন্টের জন্য কাজ করছি, আর এই সিদ্ধান্ত তারই ফল।”
সাক্ষাৎকার শেষে তিনি বলেন, “এক দল, এক সুর, ভাই আমার।”
পরে ট্রাম্প যখন ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন, তখন তিনি তার বৃহত্তর কৌশলটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন। গত সপ্তাহের ব্যাপক শুল্ক আরোপের পর এই আংশিক ছাড়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “অনেক সময় এটা আসলে আলোচনাই নয়, যতক্ষণ না সেটা আলোচনায় পরিণত হয়। আর এমনটাই ঘটে।”
তথ্যসূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট।