দেশের ভেতরে, সব দেশের সঙ্গে এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশার কথা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বেশিরভাগ সময় পৃথিবীর মানুষ শান্তির নামে একে অন্যকে হত্যা করে।
রবিবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে নিজের কার্যালয়ে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের এনডিসি ও এফডব্লিউসি কোর্সের সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন তিনি। শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতির অধ্যাপকের অধীনে থাকা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম প্রতিরক্ষা।
তাই সেনাসদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যেও উঠে এল শান্তির প্রসঙ্গ।
শান্তির প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “এটা খুবই হাস্যকর মনে হয় যে পৃথিবীর সব দেশের সরকারেরই একটি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আছে। কিন্তু কোনও শান্তি মন্ত্রণালয় নেই।
“যদি আপনার লক্ষ্য শান্তি হয়, তাহলে আপনার কি শান্তি মন্ত্রণালয় থাকা উচিত নয়?”
ড. ইউনূস বলেন, “আমি বিশেষ করে তরুণদের তাদের মনস্থির করতে, চিন্তা করতে ও স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করি। স্বপ্ন হলো পরিবর্তনের সূচনা। স্বপ্ন দেখলে পরিবর্তন হবে। আপনি যদি স্বপ্ন না দেখেন তবে এটি কখনোই হবে না।”
দেশে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে তরুণদের মনস্থির করতে ও স্বপ্ন দেখতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তরুণ কর্মকর্তাদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নিজেকে প্রশ্ন করুন আমি বিশ্বের জন্য কী করতে পারি? একবার আপনি কী করতে চান তা বুঝতে পারলে আপনি তা করতে পারবেন, কারণ আপনার সেই ক্ষমতা রয়েছে।”
বর্তমান বিশ্বে তরুণদের হাতে থাকা প্রযুক্তিকে আলাদিনের চেরাগের সঙ্গে তুলনা করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, “আপনি যদি ছাত্র বিপ্লবের দিকে তাকান, তবে এটি প্রযুক্তির বিষয়। তারা একে অপরের সঙ্গে খুব দ্রুত যোগাযোগ করতে পারত। তাদের কোন কমান্ড কাঠামো ছিল না।”
পৃথিবীকে আত্ম-ধ্বংসাত্মক গ্রহ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা শুধুমাত্র নিজেদের হত্যা করার জন্য প্রস্তুত সবকিছু করেছি। প্রতিদিন মানুষ গ্রহকে ধ্বংস করছে। আমরা একটি ভুল সভ্যতা তৈরি করেছি – আত্মবিধ্বংসী সভ্যতা।”
এসময় প্রধান উপদেষ্টা এনডিসি ও এএফডব্লিউসি কোর্সের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের সাফল্য কামনা করেন।