এবার ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে মানহানির অভিযোগ এনে এক সাংবাদিক ও সেই গৃহপরিচারিকার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলমের আদালতে এই মামলা করেন তিনি। এসময় আদালত তার জবানবন্দি নিয়ে ভাটারা থানার ওসিকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ৮ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।
মামলায় গৃহপরিচারিকা পিংকি আক্তার ও ‘সকল খবর’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোর্শেদ সুমনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ‘প্রতিদিনের বাংলাদেশ এন্টারটেইনমেন্ট’, ‘অনলাইন পোর্টাল পিপলস নিউজ’ ও ‘ডিজিটাল খবর’কে আসামির তালিকায় রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারি মো. জুয়েল মিয়া এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মামলায় বলা হয়, আসামিরা বিভিন্ন মিথ্যা, মানহানিকর সংবাদ অপপ্রচার করে পরীমনিকে হেয়-প্রতিপন্ন করে আসছেন। পিংকি আক্তার গত ৫ মে কাদের এজেন্সির মাধ্যমে পরীমনির বাচ্চা দেখাশোনার জন্য যোগদান করেন। ২৭ মার্চ ২০ হাজার টাকাও নেন পিংকি আক্তার। ২ এপ্রিল পিংকি আক্তার পরীমনির বাসা থেকে চলে যান। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা, বানোয়াট এবং অশ্লীল তথ্য প্রচার ও প্রকাশ করে আসছেন পিংকি। পিংকি আক্তারের উদ্দেশ্যমূলক দেওয়া সাক্ষাৎকারের কারণে এবং অন্য আসামিদের তা ফলাও করে প্রচার করার কারণে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে এবং পরীমনি সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, আসামিরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অসুদপায় অবলম্বন করে পরীমনির বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভুয়া ও অশ্লীল কথাবার্তা বলেন। কুৎসামূলক ভিডিও তৈরি করে ৬ এপ্রিল প্রচার করেন।
নির্যাতনের অভিযোগ এনে গতকাল ২২ এপ্রিল গৃহপরিচারিকা পিংকি আক্তার বাদী হয়ে পরীমনিসহ দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আদালত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।
নড়াইলের মেয়ে শামসুন্নাহার স্মৃতি এক দশক আগে পরীমনি নাম নিয়ে আসেন ঢাকাই চলচ্চিত্রে। মুক্তির আগেই দুই ডজনের বেশি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়ে রীতিমতো শোর ফেলে দিয়েছিলেন তিনি।
২০২১ সালের ১৩ জুন আকস্মিক এক সংবাদ সম্মেলনে বোমা ফাটানো সংবাদ দিয়ে হৈ চৈ ফেলে দেন এই চিত্রনায়িকা। তিনি অভিযোগ করেন, তার পাঁচ দিন আগে ৮ জুন তুরাগ নদীর তীরের ঢাকা বোট ক্লাবে গিয়ে ধর্ষণচেষ্টার শিকার হন তিনি।
তার অভিযোগ ছিল, বোট ক্লাবের তখনকার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যবসায়ী ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের বিরুদ্ধে।
পরদিন পরীমনি মামলা করলে নাসিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে নাসির জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে পরীমনির বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন। তাতে চিত্রনায়িকার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমিকেও আসামি করা হয়।
এর আগে ২০২১ সালেরই ৪ আগস্ট ঢাকার বনানীর ১২ নম্বর সড়কে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, আইস ও এলএসডি উদ্ধারের কথা জানায় র্যাব।
সেদিন মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় পরীমনিকে। দুই দফায় রিমান্ডে নিয়েও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক মাস পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।
