ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, বিচারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে জাতিসংঘের সর্বাত্মক তত্ত্বাবধানে কাজ করবে তদন্ত দল।
বুধবার সকালে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন গত ১৫ জুলাই সংঘাতে গড়ানোর পর থেকে ব্যাপক সহিংসতা হয় গোটা দেশে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে প্রাণ হারায় শত শত মানুষ।
এই হত্যাকাণ্ডকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিচারের দাবি খতিয়ে দেখা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, “গণহত্যা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় বিচারের জন্য এরই মধ্যে কিছু মামলা হয়েছে। আমরা নিজেরা এবং রাজপথে থাকা বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন, জনগণের বিভিন্ন গোষ্ঠী দাবি করেছেন, এটাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিচার করার সুযোগ আছে কি না। আমরা সেটা খতিয়ে দেখেছি।”
আসিফ নজরুল বলেন, “১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন আছে, যেটা পরে ২০০৯ ও ২০১৩ সালে সংশোধনী হয়েছে, সেই আইনে আমরা জুলাই গণহত্যা, জুলাই গণহত্যা বলতে আমি আগস্টের প্রথম পাঁচদিনের গণহত্যা বোঝাচ্ছি, এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য আমরা এরই মধ্যে ছোটখাটো গবেষণা করেছি।
“করে দেখেছি, এই আইনের অধীনে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি অর্থাৎ যারা আদেশ দিয়েছেন এবং যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব।”
হত্যাকাণ্ডের তদন্ত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার চেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকার করছে জানিয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, “এ বিষয়ে জাতিসংঘ থেকে আমাদের বারবার সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
“বিচারের সত্যিকারের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের সর্বাত্মক তত্ত্বাবধানে আমাদের তদন্ত দল কাজ করবে। সেটার লক্ষ্যে সব উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।”
এরই মধ্যে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “বৈঠকের দিন এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আশা করছি, দ্রুত এটা শুরু করতে পারব।”