দাবি আদায়ে আনসার বাহিনীর পোশাক পরে যারা সচিবালয় ঘেরাও করেছিলেন তাদের অন্য কোনও এজেন্ডা ছিল বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
রবিবার সচিবালয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ছাত্র সমাজকে ধন্যবাদও দেন তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা মনে করি কাল আনসার বাহিনীর ছদ্মবেশে যারা এসেছিল কোনো দাবি আদায় তাদের এজেন্ডা ছিল না। দাবি আদায় হয় আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়ে। তারা বারবার আলাপ-আলোচনা করে সম্মত হয়ে ফিরে গেছে এবং বারবার আমাদের ঘিরে ফেলেছে। লাঠি তাদের স্টকে ছিল- আপনারা দেখছেন তারা মারমুখীভাবে ছাত্রদের ওপর নির্যাতন করেছেন।”
চাকরি স্থায়ী করাসহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ করছেন আনসার বাহিনীর সদস্যরা। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আনসার সদস্যরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন, আটকে দেন সড়ক। কয়েক হাজার আনসার সদস্যের অবস্থানের কারণে সচিবালয়ে ঢোকা বা বের হওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
সচিবালয়ে আনসারের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ নিজের ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন। যেখানে তিনি সচিবালয়ে আটকে থাকার কথা এবং আনসার বাহিনী স্বৈরাচারীশক্তি হয়ে ফিরে আসার কথা লিখে শিক্ষার্থীদের ডাক দেন। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের দিকে এলে তাদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে সেনা সদস্যরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেন।
হামলায় হাসনাতসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও আনসার সদস্য আহত হন।
সোমবার হাসনাত আব্দুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন আইন উপদেষ্টা। তার সঙ্গে ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
এসময় আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, “আনসার সদস্যের দাবি ছিল- এখনই রাত ১০টার সময় প্রজ্ঞাপন জারি করে তাদের জাতীয়করণ করতে হবে। তারা এমন এক অসম্ভব দাবি তুলেছিল গন্ডগোল করার জন্য। সচিবালয়ে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারতো। জাগ্রত ছাত্রসমাজ যারা স্বৈরাচরের পতন ঘটিয়েছে, তাদের অপরিসীম ত্যাগের ভূমিকা পুরো পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে।”
তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান-সংস্থা ও বাহিনীর কর্মীরা নিজেদের দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আনসার বাহিনীর সদস্যরাও সেই ধারাবাহিকতায় নিজেদের দাবি আদায়ে মাঠে নেমেছেন।