বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গত এপ্রিল মাসে ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। একক মাসের হিসাবে এই লেনদেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই সময়ের মধ্যে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা।
এর আগে মার্চে এক লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
গত কয়েক বছর ধরেই দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মোবাইল ব্যাংকিং। এসব লেনদেনের হিসাব খুলতে কোথাও যেতে হয় না। গ্রাহক নিজেই অনায়াসে নিজের হিসাব খুলে লেনদেন করতে পারছেন।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন পরিষেবা ও কেনাকাটার বিল পরিশোধ, টিকিট কেনাসহ বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে এমএফএসে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা।
গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা; নভেম্বরে হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা।
পরিসংখ্যান বলছে, সাড়ে পাঁচ বছরের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন বেড়েছে সাড়ে চার গুণেরও বেশি। লেনদেনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গ্রাকহ সংখ্যা। সাড়ে পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮।
গত এপ্রিলে সেই গ্রাহক প্রায় সাড়ে তিন গুণ বেড়ে ২২ কোটি ৬৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ।
পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ব্যাংক এ সেবায় এসেছে। বর্তমানে বিকাশ, রকেটের পাশাপাশি মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। এর বাইরে ডাক বিভাগের নগদও দিচ্ছে এই সেবা।
এমএফএসে লেনদেন বৃদ্ধির বিষয়ে কথা হয় বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীরের সঙ্গে।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী মোবাইল আর্থিক সেবা দেশের মানুষের দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনকে প্রযুক্তিনির্ভর করে সহজ, নিরাপদ এবং তাৎক্ষণিক করেছে।
“সামগ্রিক অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার মানের ওপর যার ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশে ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল ইকোসিস্টেম শক্তিশালী করার মাধ্যমে ক্যাশলেস সমাজ নির্মাণেও এই খাত ভূমিকা রাখবে।”