দুই বছরের চুক্তিতে টনি হেমিংকে নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেট মাঠ, মাটি বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ এই অস্ট্রেলিয়ান কিউরেটর কিছুদিন আগে চাকরি ছেড়ে দেন বিসিবির। এক বছর আগেই চাকরি ছাড়া হেমিংকে দুই বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
হেমিংয়ের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট বাংলাদেশের বিপক্ষেই। রাওয়ালপিন্ডিতে ২১-২৫ আগস্ট পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। করাচিতে পরের টেস্ট ৩০ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর। এই দুই টেস্টের পিচ তৈরি করবেন হেমিং। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অক্টোবর হতে যাওয়া সিরিজটা তার দ্বিতীয় অ্যাসাইনমেন্ট।
এ নিয়ে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফ বললেন, ‘‘এটা খুব ভালো সিদ্ধান্ত। হেমিং অত্যন্ত উঁচু মানের কিউরেটর। রাওয়ালপিন্ডির পিচে বেশি মাটি দিয়ে দেওয়া হয়, তাই এটা ব্যাটিং পিচ হয়ে পরে। আশা করছি হেমিং কাজ করবেন এটা নিয়ে।’’
২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আইসিসির প্রধান পিচ কিউরেটর ছিলেন টনি হেমিং। তিনি কাজ করেছেন মেলবোর্ন, পার্থের মত ভেন্যুতে। সৌদি আরবে কাজ করেছেন ফুটবল মাঠ নিয়েও। বাংলাদেশ তাকে এনেছিল পূর্বাচলের শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নির্মাণের জন্য। তবে কাজের অগ্রগতি নেই। তাছাড়া বাংলাদেশের মূল ভেন্যু মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে কাজের সুযোগ পাননি হেমিং।
সর্বশেষ বিপিএলের সময় সিলেটের রোস ভিউ হোটেলে সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদকের মুখোমুখি হন হেমিং। বাংলাদেশের পিচ নিয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তবে মিরপুরের উইকেট কবে দেখবেন সেই প্রসঙ্গ উঠতে হাসি দিয়ে হেমিং বলেছিলেন, “ইনশাআল্লাহ, কোনও একদিন!”
হেমিং নিজেও জানতেন মিরপুরের উইকেটে তার কাজ করার সুযোগ নেই। কারণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে পিচ ও মাটি নিয়ে তার চেয়ে কম অভিজ্ঞতার গামিনি ডি সিলভা দেশের মূল ভেন্যুর দায়িত্বে আছেন।
তাই বিসিবির কার্যক্রমের কারণে কাজের দীর্ঘ সময় অ্যাকাডেমি ভবনেই এসেছিলেন হেমিং। কখনও তাকে মিরপুরের পিচ দেখতে দেখা যায়নি। তবে সিলেটে আগের পিচ বদলে দারুণ পিচ তৈরি করে দিয়েছেন তিনিই।
ভালো পিচ তৈরি করার ব্যাপারে হেমিং সকাল সন্ধ্যাকে বলেছিলেন, “ভালো পিচ তৈরির জন্য মাটির আচরণ জানতে হয়। আমি দেখলাম এখানকার মূল উইকেটে বল ভিন্ন আচরণ করে। কিন্তু অনুশীলন উইকেটে বল খুব ভালো আচরণ করে। এর কারণে অবস্থানগত। মাটির পরির্বতনের কারণে এমন হয়।”
হেমিং আরও যোগ করেন, “ভালো উইকেটের জন্য আপনাকে কিছু পর্যবেক্ষণ করতে হবে। শুধু মাটির দোষ দিলে হবে না। আমি চেষ্টা করেছি কোন মৌসুমে মাটি কেমন আচরণ করে (বাংলাদেশে) তা বুঝতে। সিলেটের উইকেটের বিষয়টা বুঝতে পারছি এজন্য এখানে ভালো উইকেট তৈরি সম্ভব হয়েছে।”