সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার জেরে সাতদিন পর বুধবার আগের সময়সূচিতে শুরু হয়েছে অফিসের কার্যক্রম।
তবে এদিন সকালে সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি ঢাকার কর্মজীবীরা। তীব্র যানজটে নাকাল হতে হয়েছে তাদের। বিশেষ করে যাদের আবাসস্থল দূরে, তাদের বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মেট্রোরেল চালুর দাবি জানিয়েছে ঢাকাবাসী।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে এক পর্যায়ে ১৯ জুলাই মেট্রোরেলের মিরপুর ১০ নম্বর ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর চালানো হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোরেল।
সেদিন রাতেই দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করে সরকার। এরপর কয়েক ধাপে কারফিউ শিথিল করা হয়। খুলে দেওয়া হয় সরকারি-বেসরকারি অফিস। ২৪ ও ২৫ জুলাই বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সীমিতভাবে চলে অফিসগুলো। পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হলে ২৮, ২৯ ও ৩০ জুলাই অফিস চলে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত।
এরপর ৩০ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে আগের সময়সূচি অর্থাৎ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিসের কার্যক্রম শুরুর কথা জানায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ঢাকার মিরপুর-১ নম্বরের বাসিন্দা শেখ ফুয়াদ আহমেদ জানান, সচিবালয়ে তার অফিসে পৌঁছাতে বুধবার প্রায় দুই ঘণ্টা লেগে যায়।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মিরপুর-১ নম্বর থেকে বাসে সকাল ৭টার দিকে রওনা দেই। প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের সিগন্যালে ১০-১৫ মিনিট আটকে থাকতে হয়েছে। ফার্মগেট আর শাহবাগে যানজট ছিল বেশি। অফিসে পৌঁছাই ৯টা ১০ মিনিটে।
“মেট্রোরেলে চেপে আগে মিরপুর-১০ নম্বরে এসে মাত্র ২০ মিনিটে সচিবালয়ে পৌঁছানো যেত। এখন সেই সুযোগ নেই। কবে মেট্রোরেল চালু হবে, সেই আশায় আছি।”
মেট্রোরেল বন্ধের প্রভাব রাজধানীর সড়কে পড়েছে বলে জানান বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. গালিব বিন খসরু।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মেট্রোরেল চালুর পর আগারগাঁওয়ের বাসা থেকে মগবাজারে আমার অফিসে ২০ মিনিটে এসেছি। এখন যানজটে সময় লাগছে এক ঘণ্টার বেশি।”
মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় আক্ষেপ করেন সরকারি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামও। তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে চড়ে আধা ঘণ্টায় মতিঝিলের অফিস থেকে উত্তরায় বাড়ি চলে যেতাম। সেজন্য ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার বন্ধই করে দিয়েছিলাম। এখন আবার গাড়ি নিয়ে চলাচল করছি।
“কিন্তু ৫টার পর অফিস থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে ৭টা বেজে যাচ্ছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ থাকায় বিকল্প পথও নেই।”