Beta
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

রেলপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ, ব্যাহত আমদানি-রপ্তানি

SS-container-transport-by-rail-bd-020824
[publishpress_authors_box]

দেশে চলমান আন্দোলন ঘিরে নাশকতার শঙ্কায় গত ১৮ জুলাই থেকে রেল যোগাযোগ বন্ধ আছে। এতে দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ট্রেনে করে আমদানি-রপ্তানি পণ্য আনা নেওয়া আটকে গেছে।  

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি পণ্যভর্তি কন্টেইনার ট্রেন চলাচল করে। এই ট্রেন দিয়ে আমদানি ও রপ্তানি দুই ধরনের পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে, যা ১৫ দিন ধরে বন্ধ আছে।

এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে রেলপথে আনা-নেওয়া দ্বিগুণ কন্টেইনার জমেছে। একইসঙ্গে কমলাপুর আইসিডিতে জমেছে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত কন্টেইনার। দুই প্রান্তে কন্টেইনার জমে থাকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন গার্মেন্ট মালিক বিশেষ করে কমলাপুর আইসিডি ব্যবহারকারী ঢাকার ব্যবসায়ীরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ও কারফিউ জারির পর সড়কপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপুল সংখ্যক কন্টেইনার জমে যায় চট্টগ্রাম বন্দরে। গত ২৩ জুলাই থেকে ইন্টারনেট সংযোগ চালু হলে বন্দর থেকে পণ্য ছাড় শুরু হয়। এরপর কন্টেইনার রাখার পরিমাণ প্রায় সহনীয় পর্যায়ে চলে আসে। কিন্তু ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কন্টেইনার প্রতিদিনই জমেছে। কবে নাগাদ এই পরিস্থিতির উত্তরণ হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহাজ থেকে ঢাকার কমলাপুরগামী কন্টেইনার রাখার পৃথক ইয়ার্ড আছে। সেখানে ৮৭৬ একক কন্টেইনার রাখা যায়। বিপরীতে কন্টেইনার আছে ১৬০০ একক। অর্থাৎ ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ কন্টেইনার জমেছে।

আর কমলাপুর আইসিডিতে কন্টেইনার রাখা যায় ২০০ একক; বিপরীতে বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত কন্টেইনার ছিল ৫০০ কন্টেইনার। সেখানে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ কন্টেইনার জমেছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের হিসাবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কমলাপুর আইসিডিতে কন্টেইনার পরিবহন হয়েছে ৮৮ হাজার ৫০৭ একক। সেই হিসাবে দিনে গড়ে কন্টেইনার পরিবহন হয়েছে ২৪৩ একক।

বন্দর থেকে প্রতিদিন তিনটি ট্রেন এই রুটে চলাচল করতো। এখন যে পরিমাণ কন্টেইনার জমেছে, সেটি পরিবহন করে স্বাভাবিক অবস্থায় পৌঁছতে অনেক সময় লাগবে। বাড়তি ট্রেন না দিলে কিংবা একই ট্রেন বেশি পরিমাণ কন্টেইনার পরিবহন না করলে জট সামলাতে অনেক সময় লাগবে।

চট্টগ্রাম বন্দর পরিবহন বিভাগের এক কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এই রুটে তিনটি ট্রেন পণ্য পরিবহন করা কথা। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতা, ইঞ্জিন সংকটে মাত্র একটি ট্রেন দিয়ে কন্টেইনার পরিবহন করছে রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে এই জট লেগেছে কিন্তু মার্চ মাস থেকেই। তার ধকল না সামলাতেই এখন কোটা আন্দোলন যোগ হলো।  

“ইঞ্জিন সংখ্যা বাড়িয়ে বাড়তি ট্রেন পরিচালনা করে এই কন্টেইনার জট নিরসনের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি। এখন যেহেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ, তাই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পণ্যবাহী ট্রেন চালু করলে দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন অনেক দ্রুত পণ্যবাহী ট্রেন পৌঁছানো সম্ভব।  এজন্য আমরা রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি।”

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা বন্দরের চিঠি পেয়েছি। কিন্তু এখন ট্রেন চলাচল তো বন্ধ আছে, কেবল স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলছে। আমরা বিষয়টির সিদ্ধান্ত জানার জন্য রেল ভবনে পাঠিয়েছি। দেখা যাক কী সিদ্ধান্ত আসে।”

কমলাপুর আইসিডিতে আটকে আছে রপ্তানি পণ্যভর্তি ৫০০ কন্টেইনার। সেগুলো ট্রেনে করে চট্টগ্রাম বন্দরে এনে জাহাজীকরণ করার কথা। ১৫ দিনেও এর সমাধান না হওয়ায় তারা পণ্য জাহাজীকরণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এই অবস্থায় অনেক রপ্তানিকারক কমলাপুর আইসিডির নাম পরিবর্তনের আবেদন করে সড়কপথেই কন্টেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে দিচ্ছেন। এতে তাদের বাড়তি পরিবহন খরচ হচ্ছে।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম রাব্বানী রিগ্যান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার ছাড় করতে না পেরে আমদানিকারকদের স্টোর রেন্ট সরকার মওকুফ করলেও কমলাপুর আইসিডির কন্টেইনারগুলো সেই সুবিধা পায়নি। তারাও তো একইকারণে ক্ষতির শিকার। ফলে তাদের মওকুফ সুবিধা দেওয়া উচিত।”  

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত