যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে জো বাইডেন শুভেচ্ছা বার্তা পাবেন, এটাই স্বাভাবিক।
তাই বলে তিনি বিশেষ একজনের কাছ থেকে বার্তাটি মোটেও আশা করেননি।
সম্প্রতি রুশ টেলিভিশনের সাংবাদিক পাভেল জারুবিন প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে জানতে চান, “আমাদের জন্য কে ভালো, বাইডেন নাকি ট্রাম্প?”
ভ্লাদিমির পুতিন ঝটপট উত্তর দেন। বলেন, “বাইডেন। তিনি অভিজ্ঞ, তার চিন্তা আগে থেকেই বোঝা যায়। সর্বোপরি তিনি একজন পুরাতন ধাঁচের রাজনীতিবিদ।”
বাইডেনের কর্মক্ষমতারও প্রশংসা করেন পুতিন।
তিনি বলেন, “সুইজারল্যান্ডে বাইডেনের সঙ্গে কয়েক বছর আগে আমার দেখা হয়েছিল। কেউ কেউ তখন বলেছিলেন যে, তিনি কাজের অযোগ্য। আমি কিন্তু তেমন কিছু দেখিনি।
“হ্যাঁ, তিনি তার কাগজপত্রের দিকে তাকাচ্ছিলেন। সত্যি কথা বলতে, আমিও তাই করেছি। এর কোনও মানে নেই। একবার হেলিকপ্টার থেকে বের হওয়ার সময় বাইডেন মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। বেশ, তবে কে বলতে পারে, তাদের মাথায় কখনও এমন আঘাত লাগেনি।”
এই কথাগুলো বলছেন ক্রেমলিনের এমন এক নেতা, যাকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ‘খুনি স্বৈরাচার’, ‘গুন্ডা’ ছাড়াও ‘ভূমি ও ক্ষমতার প্রতি অসীম লোভী’ বলেছেন।
তাহলে কি আমরা ধরে নেব, পুতিন সবকিছু ক্ষমা করে দিয়েছেন। ক্রেমলিন সব ভুলে গেছে?
মনে হয় না।
ভ্লাদিমির পুতিন ও রাশিয়া সম্পর্কে জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতীতের বক্তব্য তুলনা করলে কী দেখা যায়?
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুতিনকে ‘স্মার্ট’ ও ‘জিনিয়াস’ বলেছিলেন। এমনকি তিনি পুতিনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, ন্যাটোর যেসব রাষ্ট্র নির্ধারিত বিল দিতে পারে না, সেসব দেশের কোনও একটির ওপর আক্রমণ করলে তিনি রাশিয়াকে ‘উৎসাহিত’ করবেন।
কিন্তু পুতিন যদি ট্রাম্পের ভক্তই হন, তাহলে কেন তিনি বলেছেন, হোয়াইট হাউসে তিনি জো বাইডেনকে ফিরে পেতে চান?
একবার কল্পনা করুন, ভ্লাদিমির পুতিন প্রকাশ্যে বলেছেন, তিনি ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান। এমনটা হলে তা বাইডেনের জন্য বিশেষ উপহারই হতো।
ডোনাল্ড ট্রাম্প পুতিনের সমর্থন পেলে তার রাজনৈতিক বিরোধীরা তীব্র সমালোচনা শুরু করবেন। তারা ট্রাম্পকে রাশিয়ার সঙ্গে যোগসাজশ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করবেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের দুই বছর পর রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন।
এমনটা হলে ভোটে রিপাবলিকানদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হন, তাহলে রাশিয়া ও পুতিনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে তাকে অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
ট্রাম্পের দল এখন পুতিনের বক্তব্য ব্যবহার করে বাইডেনের বিরুদ্ধে প্রচার চালাবে। আর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্রেমলিনের সমর্থনের অভিযোগ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেবে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি