যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবারও হত্যার চেষ্টা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই।
পেনসিলভানিয়ায় একটি নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় গুলি করে হত্যাচেষ্টার দুই মাস পর আবারও ট্রাম্পের প্রাণনাশের চেষ্টা হলো।
সর্বশেষ ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে নিজের গলফ কোর্সে গলফ খেলার সময় ৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার চেষ্টা হয়।
তবে ট্রাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের তৎপরতায় হামলাকারী পালিয়ে গেলে এ যাত্রায়ও বেঁচে যান সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
পরে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায় সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তারা জানান, সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা গলফ কোর্সের সীমানার কাছে ঝোপের মধ্যে একজন বন্দুকধারীকে দেখতে পেয়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় সন্দেহভাজন হামলাকারী একটি একে-৪৭ ধরনের অ্যাসল্ট রাইফেল এবং অন্যান্য জিনিসপত্র ফেলে একটি গাড়িতে করে পালিয়ে যায়।
তবে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও পরে সন্দেহভাজন ওই হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়।
নাম প্রকাশ না করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রের বরাতে সিএনএন, ফক্স নিউজ ও নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গলফ কোর্সে ট্রাম্পের ওপর হামলা চালানো ব্যক্তির নাম রায়ান ওয়েসলি রুথ। তিনি হাওয়াইয়ের বাসিন্দা, বয়স ৫৮ বছর।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায় এফবিআই।
এর আগে গত ১৩ জুলাই পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে একটি নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলি ট্রাম্পের ডান কান ভেদ করে গেলেও প্রাণে বেঁচে যান রিপাবলিকান পার্টির এই প্রার্থী।
ওইদিন ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর পরপরই সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের গুলিতে হামলাকারী নিহত হয়।
সে সময় সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রাম্প মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। এ সময় হঠাৎ গুলির শব্দ হয়। সঙ্গে সঙ্গে কানে হাত দিয়ে পোডিয়ামের আড়ালে বসে পড়েন ট্রাম্প। এরপর নিরাপত্তারক্ষীরা দ্রুত তাকে ঘিরে ফেলেন।
ওই সময় বেশ কিছুক্ষণ বসেছিলেন ট্রাম্প। মঞ্চেই পোডিয়ামের আড়ালে তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। কিছুক্ষণ পরে তাকে ধরে আস্তে আস্তে তোলা হয়। ট্রাম্প উঠে দাঁড়ান। তখন তার কান থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়।
তবে কানে গুলি লাগলেও দমে যাননি ট্রাম্প। উঠে দাঁড়ানোর পরপরই ডান হাত ওপরের দিকে তুলে মুষ্টিবদ্ধ করে বলতে থাকেন ‘ফাইট, ফাইট, ফাইট’। পরে নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে ঘটনাস্থল ছাড়েন।
সেবার হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই) হামলাকারীর পরিচয় নিশ্চিত করে জানায়, হামলাকারীর নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। তার বয়স ২০। তিনি পেনসিলভানিয়ারই বাসিন্দা।
এ ঘটনা তদন্ত করে পরবর্তী সময়ে এফবিআই নিশ্চিত করে, হত্যার উদ্দেশ্যেই রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর ওই হামলা হয়েছিল।
