ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুতিদের ওপর শনিবার রাতে বড় ধরনের সামরিক হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে কমপক্ষে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ২৩ জন।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসার পর এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যে এত ব্যাপক আকারে সামরিক অভিযান চালালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলার সময় হুতিদের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “তোমাদের সময় শেষ।”
হুতিদের ওপর তার এই হামলা আগামী আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
ইয়েমেনের হুতি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, রাজধানী সানায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারায়। আহত হয় ৯ জন।
সানার পাশাপাশি ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ সাদা একই সময়ে হামলার শিকার হয়। সেখানে চারটি শিশু ও এক নারীসহ কমপক্ষে ১১ জন নিহত এবং ১৪ জন আহত হয় বলে স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল আল-মাসিরাহর প্রতিবেদনে বলা হয়।
রাজধানী সানার বাসিন্দা আবদুল্লাহ ইয়াহিয়া রয়টার্সকে বলেন, “এখানে হুতিদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার একটি ভবন লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এতে এত বড় বিস্ফোরণ হয় যে, পুরো এলাকা ভূমিকম্প হওয়ার মতো কেঁপে ওঠে। হামলাকারীরা আমাদের নারী ও শিশুদের আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দেয়।”
রবিবার ভোরের দিকে আল-মাসিরাহ জানায়, সাদা প্রদেশের দাহিয়ান শহরে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও হামলা হয়। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে।
হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তনের পর ইরানকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে দেশটির পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানি নেতাদের আলোচনার টেবিলে আনারও চেষ্টা করছেন তিনি।
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই উত্তেজনার মধ্যে ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুতিদের ওপর হামলা করলেন ট্রাম্প।
হামলা চালিয়ে নিজের মালিকাধীন সোশাল মিডিয়া ট্রুথ সোশালে একটি পোস্টও দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে লোহিত সাগরে চলাচল করা বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর হুতিদের হামলার প্রসঙ্গ টেনে ওই পোস্টে বড় হাতের অক্ষরে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প লেখেন, “সব হুতি সন্ত্রাসীকে বলতে চাই, তোমাদের সময় শেষ। আজ থেকে তোমাদের হামলা বন্ধ করতে হবে।
“হামলা বন্ধ না করলে, তোমাদের ওপর এমন ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে, যা তোমরা আগে কখনও দেখোনি!”
এদিকে হুতিদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠনটির রাজনৈতিক ব্যুরো।
এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “আক্রমণ বাড়লে পাল্টা আক্রমণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আছে আমাদের ইয়েমেনি বাহিনী।”