আন্দোলনে আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
শনিবার শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম সারাহ্ ফারজানা হকের আদালত এই আদেশ দেয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনের শিক্ষক তুরিন আফরোজ ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন। জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনায় ছিলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলেই প্রসিকিউশন দল থেকে বাদ পড়ার পর একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য হিসাবে সক্রিয় ছিলেন তুরিন।
গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তরায় তুরিনের বাড়িতেও হামলা হয়েছিল। তার প্রায় আট মাস পর আব্দুল জব্বার নামের ওই শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি হিসেবে গত ৭ এপ্রিল রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
রিমান্ড শেষে শনিবার তুরিন আফরোজকে আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক সুমন মিয়া। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, তুরিনসহ আসামিরা ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার এবং বিতর্কিত করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অনুভূতিতে আঘাত করে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে উস্কে দিয়ে সারাদেশে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার আগে দুপুর ১২টার দিকে উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হন জব্বার। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সেরে ওঠেন তিনি। জব্বারসহ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর জন্য আসামিদের দায়ী করা হয় মামলায়।
ঘটনার ৭ মাস পর গত ২৭ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় জব্বার মামলাটি করেন। তাতে আসামি হিসাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তুরিন আফরোজসহ ৫০ জনের নাম রয়েছে। তুরিনের নাম ৩০ নম্বরে।