ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় জামিয়া রওযাতুল উলুম মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমানের আদালত এ আদেশ দেয়। শুনানিকালে তাকে আদালতে এজলাসে ওঠানো হয়। আদালতে ওঠানো ও নামানোর সময় তাকে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় দেখা যায়।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী আরাফাত হুসাইন (১২) রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ৫ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর রোডের জামিয়া রওযাতুল উলুম মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট সকাল ৮ টা থেকে সরকার পতনের দাবিতে ৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় বিক্ষোভ করছিল। এসময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন আরাফাত। পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এ ঘটনায় রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর বড় ভাই মো. হাসান আলী।
গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত। এরপর থেকে কারাগারে আছেন তিনি।
আনিসুল-মোশাররফ-চাখারী রিমান্ডে
ঢাকার শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানায় করা আলাদা দুই মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীর বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বুধবার সকালে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমানের আদালত এ আদেশ দেয়।
এদিন তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর জুট ব্যবসায়ী মো. মনিরকে হত্যার অভিযোগে শাহবাগ থানার মামলায় আনিসুলকে গ্রেপ্তারসহ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মোশাররফ হোসেন ও বাবুল সরদার চাখারীর ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন উপপরিদর্শক বিমান তরফদার। শুনানি শেষে আদালত আনিসুলের পাঁচ দিন ও বাকি দুই জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
হত্যা মামলার অভিযোগে জানা যায়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চানখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির। দুপুরে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী গত ১৪ মার্চ শাহবাগ হত্যা মামলা করেন।
হত্যাচেষ্টা মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, নিপীড়ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এতে দেশের সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদসহ অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দল এই মহাসমাবেশের ডাক দেয়। এতে ভুক্তভোগী বদরুল ইসলাম সায়মন অংশ নেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা অতর্কিত হামলা করে। এ সময় আসামিদের এলোপাতাড়ি গুলিতে বাদী নিজে গুলিবিদ্ধ হন।
পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত ২৯ এপ্রিল ভুক্তভোগী গণ অধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মন বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানা হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। এতে শেখ হাসিনাসহ ২৪৫ জনকে আসামি করা হয়।