হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনায় পড়ে স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে। এর ধ্বংসাবশেষের অবস্থান সনাক্ত হয় প্রায় ১২ ঘণ্টা পর সোমবার ভোররাতে।
পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জলফা ও ভার্জাঘানের মাঝে অবস্থিত সুঙ্গুন নামের তামা খনির কাছে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। স্থানটি ইরানের অন্যতম বড় শহর তাবরিজ থেকে ৭০-১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
পার্বত্য বনাঞ্চলে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই ইরানের ৪০টি উদ্ধারকারী দল কাজ শুরু করে। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে শুরু থেকেই উদ্ধার তৎপরতা বিঘ্নিত হয়।
ইরানকে এই উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের ইরান শাখা, তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের ‘র্যাপিড রেসপন্স ম্যাপিং সার্ভিস’ ব্যবহার করে ইরানকে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির অবস্থান সনাক্ত করতে সহায়তা করে। এই সার্ভিসটি পরিচালনা করে ইউরোপীয়ান কমিশনের কোপার্নিকাস ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস।
তবে হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ সনাক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে তুরস্কের ড্রোন।
তুরস্কের তৈরি বায়রাক্তার আকিনচি নামের একটি ড্রোন হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ থেকে আসা তাপ সনাক্ত করে। এরপর সেই তাপের উৎস ধরে হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষের অবস্থানও সনাক্ত করা হয়।
রবিবার বিকালে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর রাতে ইরানের অনুরোধে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বায়রাক্তার আকিনচি ইউএভি এবং একটি কুগার-টাইপ হেলিকপ্টারকে অনুসন্ধানে নামায়। সেগুলোয় রাতের অন্ধকারেও দেখার ব্যবস্থা ছিল।
সোমবার ভোরের দিকে তুরস্কের ড্রোন থেকে হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ থেকে আসা তাপ সনাক্ত করা হয়। সেসময় উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে ছিলেন।
রবিবার আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে ইরানের পূর্ব-আজারবাইজান প্রদেশে দুটি জলাধার প্রকল্পের বাঁধ উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এরপর হেলিকপ্টারে প্রদেশটির তাবরিজ শহরের ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। তখনই দুর্যাগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়ে ঘটে এই দুর্ঘটনা।
ভারী বৃষ্টিপাত ও ঘন কুয়াশার কারণে সামনে এগোতে না পেরে হেলিকপ্টারটি জরুরি অবতরণের চেষ্টা করলে সেটি পাহাড়ি বন এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে রাইসি ও তার সহযাত্রীরা সবাই মারা যান।
হেলিকপ্টারটিতে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান, পূর্ব-আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রাহমাতি এবং প্রদেশটিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র ইমাম আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেমও ছিলেন।
তথ্যসূত্র : আনাদুল নিউজ এজেন্সি