Beta
সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪

কক্সবাজার সৈকতে ভেসে এল দুটি মৃত পরপইস

কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসা একটি পরপইসের শরীর ছিল ক্ষতবিক্ষত। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসা একটি পরপইসের শরীর ছিল ক্ষতবিক্ষত। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের পানির সঙ্গে আবারও ভেসে এসেছে বিপন্নপ্রায় প্রাণী পরপইসের মৃতদেহ। অনেকটা ডলফিনের মতো দেখতে এই জলজ প্রাণীগুলো স্তন্যপায়ী।  

রবিবার দুপুর থেকে বিকালের মধ্যে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের সৈকতে দুটি মৃত পরপইস ভেসে আসে।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, দুপুরে বাহারছড়া সৈকতে একটি মৃত পরপইস ভেসে আসে বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পাওয়া যায়। ঘন্টাখানেক পর একই স্থানে আরেকটি মৃত পরপইস ভেসে আসে।

পরপইস দুইটি স্থানীয়রা উদ্ধার করে মাটি চাপা দেয়।

এর আগে ৩০ আগস্ট সৈকতে ভেসে এসেছিল একটি মৃত স্পিনার ডলফিন। তার আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত কক্সবাজারের বিভিন্ন সৈকত থেকে একের পর এক মৃত কচ্ছপ, ডলফিন ও পরপইস ভেসে আসার খবর পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কক্সবাজার সামুদ্রিক কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, “মৃত উদ্ধার দুইটি পরপইসের মধ্যে একটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে, নৌকার সঙ্গে সংঘর্ষ কিংবা অন্য কোনোভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এটি মারা পড়েছে। তবে অন্যটির শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই।”

শব্দ ও জলদূষণ এবং বাঁধ, পোতাশ্রয়সহ অন্যান্য নির্মাণ কাঠামোর কারণে বিপন্নপ্রায় হিসেবে চিহ্নিত এই প্রাণীর জীবন হুমকিতে পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সবশেষে ভেসে আসা মৃত পরপইসের বৈমিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে চাইলে বোরির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, এরা ইন্দোপ্যাসিফিক ফিনলেস পরপইস হিসেবে পরিচিত। এদের বৈজ্ঞানিক নাম নিওফোকেনা ফোকেনয়েডস। দেখতে ইরাবতী ডলফিনের মতো পরপইস একটি ছোট জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী। এদের পৃষ্ঠীয় পাখনা থাকেনা।

“বাচ্চা অবস্থায় কালো রঙের হলেও বয়সের সঙ্গে রঙ বিবর্ণ হয়ে যায়। এটি ৫-৬ ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়। এদের শরীর মজবুত এবং মাথা অনেকটা গোলাকার।”

পরপইস অগভীর জল, জলাভূমি এবং মোহনা পছন্দ করে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, এরা সাধারণত একা চলাফেলা করতে পছন্দ করে। তবে খাদ্য গ্রহণের সময় এরা দলে চলাফেরা করে। একেকটি দলে পাঁচ থেকে ১২টি বা ৫০টির বেশি পরপইসকে দেখা যায়।

খাবার হিসেবে পরপইস গ্রহণ করে থাকে বিভিন্ন ধরনের মাছ, স্কুইড, চিংড়ি, অক্টোপাস এবং মাঝে মাঝে সামুদ্রিক উদ্ভিদও। সাধারণত বসন্তে বা গ্রীষ্মে এরা সন্তান জন্ম দেয়, জন্মের পর পরপইসের বাচ্চা মায়ের পিঠের সঙ্গে লেগে থাকে।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকায় পরপইস বিপন্ন প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত। ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটির সর্বশেষ জরিপে বঙ্গোপসাগরে মোট ১৩ জাতের সিটাসিয়ান বা সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে আট প্রজাতির ডলফিন, চার প্রজাতির তিমি ও মাত্র এক প্রজাতির পরপইস রয়েছে। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত