Beta
রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫

আমিরাতে দণ্ডিত ৫৭ জন পেয়েছেন ক্ষমা, ফিরছেন দেশে

ss-uae-flag-03092024
[publishpress_authors_box]

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভ করার অপরাধে দণ্ডিত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান দোষী সাব্যস্ত বাংলাদেশিদের সাজা মওকুফের আদেশ দিয়েছেন। 

একই সঙ্গে এই ৫৭ বাংলাদেশিকে আমিরাত থেকে বহিষ্কারের ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।

দুবাইভিত্তিক ইংরেজি গণমাধ্যম খালিজ টাইমস জানিয়েছে, মঙ্গলবার প্রেসিডেন্টের নির্দেশের পর অর্ধশতাধিক বাংলাদেশির সাজা বাস্তবায়ন বন্ধ এবং তাদের বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরুর আদেশ দেন আমিরাতের অ্যাটর্নি জেনারেল ডা. হামাদ আল শামসি।

পাশাপাশি দেশের আইনের প্রতি সম্মান জানাতে আমিরাতের বাসিন্দাদের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আমিরাত রাষ্ট্র ও এর আইনি কাঠামো মতপ্রকাশের অধিকারকে সুরক্ষা দেয়। তবে এই অধিকারকে কোনও ধরনের ক্রিয়ায় রূপ দেওয়া যাবে না, যে ক্রিয়া দেশের জনগণের স্বার্থহানি করতে পারে।”         

আমিরাতে এ মুহূর্তে ৯ লাখ বাংলাদেশি অবস্থান করছে। এই সংখ্যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৭ শতাংশ।     

বাংলদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই এর প্রতি সমর্থন জানিয়ে আমিরাতের দুবাই, শারজাহ ও আজমান শহরে বিক্ষোভ করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তারা এর মধ্য দিয়ে ছাত্রদের দাবি মেনে নিতে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারকে চাপ দিতে চেয়েছিলেন।

সেদিন বিক্ষোভের একপর্যায়ে ৫৭ বাংলাদেশিকে আটক করে আমিরাতের পুলিশ। দুদিন পর ২২ জুলাই দাঙ্গা, যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং সম্পদহানির অভিযোগ এনে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করায় আমিরাত সরকার।

বিক্ষোভের আহ্বান ও দাঙ্গা উসকানোর অভিযোগে সেদিন তিন বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আমিরাতের আদালত।

আর ৫৪ জনকে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ ও দেশটিতে অবৈধভাবে প্রবেশ করার অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগের পর বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। এই ৫৪ জনের মধ্যে ৫৩ জনের ১০ বছর এবং একজনের ১১ বছর কারাদণ্ড হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে এ মুহূর্তে ৯ লাখ বাংলাদেশি অবস্থান করছেন।

আদালতের রায়ের পর আমিরাতে বাংলাদেশি দূতাবাস স্থানীয় আইন মেনে চলতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

এছাড়া তাদের প্রতি অবৈধ কর্মকাণ্ডে অংশ না নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়। আমিরাতে বাংলাদেশি মিশন প্রবাসীদের মনে করিয়ে দেয়, অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়ানোর শাস্তি ভিসা বাতিল, কারাদণ্ড, জরিমানা ও আমিরাতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা।

‘প্রধান উপদেষ্টার কথা রেখেছেন আমিরাতের প্রেসিডেন্ট’

মঙ্গলবার সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমিরাতে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের ক্ষমা পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, “আমিরাতের আদালত যে ৫৭ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে, তাদের সবাইকে আজ ক্ষমা করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।”

একই কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

এদিন ঢাকার বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেলজয়ী; আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার পরিচিতি ও সুনামের কারণে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের ক্ষমা করা হয়েছে।”

আমিরাতে এ ধরনের ক্ষমার ঘটনা ‘বিরল’ উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, “২৮ আগস্ট আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। সেই ফোনালাপের বড় অংশ ছিল এই ৫৭ জনের মুক্তি। 

“প্রধান উপদেষ্টা প্রেসিডেন্টকে তাদের ব্যাপারে অনুরোধ করেছিলেন, তাদের যেন ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আমিরাতের প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টার কথা রেখেছেন।”

৫৭ প্রবাসী বাংলাদেশিকে ক্ষমা করানো বড় চ্যালেঞ্জ ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন তাদের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আমিরাতে বাংলাদেশের দূতাবাসের সঙ্গে কথা হচ্ছে।

“তারা জানিয়েছেন, আমিরাতের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের বিষয়ে কী হবে, তা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সম্ভবত ৫৭ বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসবেন।”  

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত