হাওর বিধৌত ভাটি অঞ্চলে গত শতাব্দীর পুরোটা জুড়ে যে অসাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছেন সেখানকার বাউল সাধকেরা, উকিল মুন্সী তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য; শরীয়তি ধারায় জীবনযাপন করেও বাংলার ভাবান্দোলনে যার অসামান্য অবদান। উকিল মুন্সী মানবিক কলতানে মুখরিত করেছেন ভাটির জল হাওয়া।
বাঙালি সংস্কৃতির শেকড় আঁকড়ে ধরার কথা উঠলেই আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন উকিল মুন্সী এবং তার গান।
‘পূবালী বাতাসে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘শুয়া চাঁন পাখি’ গানের স্রষ্টা বিরহী বাউল উকিল মুন্সীর ৪৬তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন।
১২ ডিসেম্বর বিকাল ৩টা থেকে ‘উকিল মুন্সী স্মরণোৎসব- ১৪৩১’ শিরোনামের এই আয়োজন শুরু হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহবুব খালাসী বলেন, “সংগীত চর্চা যে ধর্মপরিপন্থী কোনো ধারণা নয়, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ভাটি বাংলার উকিল মুন্সী।
“তিনি একই সাথে মসজিদের ইমামতি করতেন আবার বাউল গানের মঞ্চে গান গাইতেন। এতে কারো কোনো বিপত্তিও দেখা যায়নি। তিনি বাউল গানের মঞ্চে এবং মোনাজাতের সময় চোখের জলে ভাসাতেন উপস্থিত দর্শক মুসল্লিদের। অনেকে মৃত্যুর আগে ইচ্ছা পোষণ করে যেতেন উকিল মুন্সী যেন তার জানাজায় ইমামতি করেন।”
অনুষ্ঠানে আলোচনা করবেন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহার এবং বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী কফিল আহমেদ।
উকিল মুন্সীর ভাববাণী পরিবেশন করবেন আকাশ গায়েন, শাহ মুহাম্মদ শিপন, খোকন চিশতি, মারুফ মৃন্ময়, নবীন কিশোর গোস্বামী, অভিষেক রায় অর্চন, অনিন্দ্য বিশ্বাস, জয়ন্ত পাল জয়, ইমরান হোসাইন, শ্যামল আহমেদ সজল, অয়ন ইসলাম অলি, আবু রাশেদ, আশিকুর রহমান বন্ধন, নাজমুল হাসান লানজু, নিয়ন রেজা, তন্ময় চন্দ্র রায়, লিওনাদ ধ্রুব, হৃদয় রায় হিমেল, দেওয়ান রিজওয়ান, শাহনী বেপারী প্রমুখ।
উৎসবে অনার্য মুর্শিদ পরিচালিত ‘উকিল মুন্সী: বিরহী ভাবের সম্রাট’ প্রামান্যচিত্র প্রদর্শিত হবে; যা প্রযোজনা করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।