চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস। তিনি যাবেন কক্সবাজারেও। সেখানে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে শুক্রবার এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়েছে বলে বুধবার বাসস জানিয়েছে।
ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী শুক্রবার কক্সবাজারে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন।
নিপীড়নের মুখে মিয়ানমারের থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে ১২ লাখের মতো রোহিঙ্গা। তাদের অধিকাংশই রয়েছে সীমান্ত জেলা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশে তার চার দিনের সফরের দ্বিতীয় দিনেই যাবেন কক্সবাজারে। ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকবেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফর। এর আগে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ঘুরে গিয়েছিলেন গুতেরেস।
রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন ধরে রাখতে কাজ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন গুতেরেস।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা এক চিঠিতেও তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি ওই চিঠিতে বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে এবং মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগের কারণ তিনি উপলব্ধি করতে পারেন।
গুতেরেস বলেছেন, তার কার্যালয় এবং মিয়ানমারে তার বিশেষ প্রতিনিধি রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনের পথ খুঁজতে আশিয়ান জোটসহ আঞ্চলিক পক্ষগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে, যাতে রোহিঙ্গারা রাখাইনে তাদের আবাস ভূমিতে নিরাপদে ফিরতে পারে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর নিপীড়নের মুখে ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশ সীমান্তে নামে রোহিঙ্গা ঢল। তাতে কয়েক মাসেই ৭ লাখের বেশি শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।
এর আগে থেকেই বাংলাদেশে ছিল ৩ লাখের মতো রোহিঙ্গা। শরণার্থী জীবন কাটানো রোহিঙ্গাদের ঘরে নতুন সন্তান আসায় সংখ্যাটি এখন ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়।
এই রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই আছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে। কিছু রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে নেওয়া হয় কয়েক বছর আগে।
রোহিঙ্গা সংকটের কারণে লাখ লাখ শরণার্থীর ভার বহন করে সবচেয়ে বেশি ভুগছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হলেও কোনও শরণার্থীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো যায়নি।
এর মধ্যে ২০০২ সালে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা নেয় সামরিক বাহিনী। এখন আবার বিদ্রোহী দলগুলো শক্তিশালী হয়ে ওঠায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরও কয়েক হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে।



