যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম বেসরকারি স্বাস্থ্যবীমা প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্রায়ান থম্পসনকে (৫০) রাস্তায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ম্যানহাটনের মিডটাউনের হিলটন হোটেলের বাইরের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। বিনিয়োগকারীদের একটি সম্মেলনে অংশ নিতে হেঁটে হোটেলের দিকে যাওয়ার পথে তাকে গুলি করা হয়।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ এই হত্যাকাণ্ডকে “পরিকল্পিত ও লক্ষ্যকেন্দ্রিক” ঘটনা বলে অভিহিত করেছে।
এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। নিউ ইয়র্ক পুলিশ আততায়ী সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার জন্য ১০ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
পুলিশ জানায়, একজন বন্দুকধারী গাড়ির আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে পেছন থেকে থম্পসনকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তার পিঠ ও ডান পায়ে গুলি লাগে।
পুলিশের প্রধান গোয়েন্দা কর্মকর্তা জোসেফ কেনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে থম্পসনকে দ্রুত রুজভেল্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে তাকে বাঁচানো যায়নি, সকাল সোয়া ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এটি কোনও আকস্মিক হামলা নয়, বরং পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা পুরোপুরি তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।”
নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, আততায়ী গুলি চালানোর আগে হোটেলের বাইরে প্রায় পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করেছিল।
নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বন্দুকধারী একটি কালো মুখোশ, ধূসর ব্যাকপ্যাক এবং সাদা-কালো স্নিকার্স পরে ছিল। হামলার পর সে একটি ই-বাইকে চড়ে সেন্ট্রাল পার্কের দিকে পালিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল থেকে ৯ মিলিমিটারের তিনটি তাজা গুলি এবং তিনটি ব্যবহৃত গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা গুলি চালাতে ব্যবহৃত অস্ত্রটি সাইলেন্সারসহ ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছেন।
থম্পসনের স্ত্রী পলেট থম্পসন এনবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, তার স্বামীকে আগে থেকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তিনি বলেন, “কয়েকজন মানুষের কাছ থেকে হুমকি পাচ্ছিলেন তিনি। তবে তিনি তার যাতায়াতের অভ্যাস পরিবর্তন করেননি।”
ইউনাইটেডহেলথ গ্রুপ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা থম্পসনের মৃত্যুর খবরে গভীর শোকাহত এবং পুলিশ বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
ব্রায়ান থম্পসন ২০০৪ সালে ইউনাইটেডহেলথ গ্রুপে যোগ দেন এবং ২০২১ সালে সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন। সম্প্রতি তিনি একটি ভেতরের তথ্য ফাঁস সংক্রান্ত অভিযোগের সম্মুখীন ছিলেন।
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল এবং মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আততায়ীকে ধরার এবং হত্যার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।