উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে গড়ে ৩৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বুধবার ভোট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে বুধবার ২৬ জেলার ৬০ উপজেলায় ভোট হয়েছে। ভোটগ্রহণ শুরু হয় সকাল ৮টায়, চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় গড় ভোট পড়ে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজলায় ভোট পড়ার হার ১ দশমিক ৫৬ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়ে দাড়াঁয় ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
তৃতীয় ধাপে ৮৭ উপজেলায় ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। রেমেলের কারণে স্থগিত হওয়ায় আগামী ৯ জুন ভোট হবে ২২ উপজেলায়।
ঢাকার আগারগাওঁয়ে নির্বাচন ভবনে ভোট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ‘সহিংসতা ছাড়াই’ ভোট হওয়ায় কমিশন সন্তুষ্ট বলেও জানান সিইসি।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, “২৬ জেলায় ৬০ উপজেলায় উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হয়েছে। ৭২১ জন ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৫ হাজার ১৪৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ২ হাজার ৮৯ টি কেন্দ্রের যে ফলাফল পেয়েছি তা গড় করে ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা হচ্ছে ৩৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ।”
২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “তার মধ্যে ৯ জন দণ্ডিত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করেছেন। আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার কারণে ২১ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। ভৈরব উপজেলায় ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়েছে। ব্যালট বাক্স খুলে ফেলেছে, যার ফলে ওই কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে।”
ভোটে সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, “ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ১১ জন খু্ব অল্প আহত হয়েছে। ১১ জনের বাইরে পাঁচজন আহত হয়েছে … মোটরসাইকেল নিয়ে ধাওয়া করতে গিয়ে। খু্ব গুরুতর নয়। কিন্তু মাইনরের চেয়ে একটু বেশি।”
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার সহকালী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “কর্মকর্তা নিজেই ব্যালট পেপারে সিল মারতে ছিল। সেটা উদঘাটিত হয়। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাঁচটি জাল ভোটের ঘটনা ঘটেছে।”
চার ধাপের উপজেলার ভোটে ইতিবাচক দিক কোনগুলো এবং কোন বিষয়ে অতৃপ্তি আছে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। এগুলো নিয়ে আমরা পরে বিশ্লেষণ করব।”
কোথাও কোথাও অমোচনীয় কালি উঠে যাচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “হতে পারে। তবে এ ব্যাপারে আমরা অভিযোগ পাইনি। কেউ কেউ অতি কায়দা করে লেবু, এসিড দিয়ে তুলে ফেলার চেষ্টা করে।”
নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এগুলো নিয়ে আমি, আমাদের কোনও সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির বিষয় নেই। খুবই সন্তুষ্ট নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ হয়েছে। সহিংসহতা হয়নি। সেটা সন্তুষ্টির বিষয়।”
এবার চার ধাপে দেশের ৪৯৫ উপজেলায় নির্বাচনের আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন। সংসদ নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনও বর্জন করছে বিএনপিসহ কয়েকটি দল। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন জমিয়ে তোলার লক্ষ্যে দলীয় প্রতীক কাউকে না দিয়ে ভোট উন্মুক্ত করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
সবশেষ ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গড় ভোট পড়ে ৪১ শতাংশের বেশি। এর আগে ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট পড়ে ৬১ শতাংশ। ২০০৯ সালে তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোট পড়ে।