উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহী করতে অর্থের লেনদেনের খোঁজ পাওয়ার কথা জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, এগুলো বাস্তবতা। এর থেকে বের হয়ে আসার পথ খুঁজছেন তারা।
রবিবার ঢাকার নির্বাচন ভবনে ১৯ উপজেলার ভোট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চার ধাপে করতে চেয়েছিল কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে তৃতীয় ধাপের ১৯ উপজেলার ভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এসব উপজেলায় ভোট হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বলেন, “ভোটের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ছিল। সংখ্যায়ও কম উপজেলা ছিল। সেদিক থেকে বেশি শান্তিপূর্ণ ছিল।”
ভোটে অনেকেই চেষ্টা করে শক্তি প্রয়োগ করতে জানিয়ে তিনি বলেন, “অর্থের লেনদেন প্রচুর হয়ে থাকে। অর্থের লেনদেন হয়ে থাকে ভোটারদের আগ্রহী করার জন্য; আনা-নেওয়ার জন্য। অনৈতিকভাবে অর্থের লেনদেনের খবর আমরা পেয়ে থাকি। এগুলো বাস্তবতা। এগুলো থেকে উত্তরণের চেষ্টা, পরিশেষে আলোচনা করে কীভাবে উত্তরণ ঘটানো যায় সে চেষ্টা চলছে।”
নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটির প্রধান বলেন, “চারধাপে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন বিন্যাস্ত করছিলাম। পঞ্চম ধাপে ১৯ উপজেলায় বিন্যাস্ত করা হয়েছে।
“তৃতীয় ধাপে নির্বাচন করার সময় উপকূলীয় অঞ্চলে যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল সে কারণে এগুলোকে শিফট করতে হয়েছে। যদিও প্রথমে আমরা চারটি ধাপে বিন্যাস্ত করেছিলাম। পরিশেষে এটা পাঁচটি ধাপে বিন্যাস্ত হয়েছে।”
দেশে ৪৯৫ উপজেলা পরিষদ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “৪৬৯টি উপজেলায় নির্বাচন করলাম। ৯ জেলায় ১৯ উপজেলায় ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন হয়েছে। ২৬টি উপজেলা বাকি থাকবে। আদালতের নির্দেশনায় ২৬টি বাকি আছে। এগুলো যথাসময়ে আমরা করব।”
১৯ উপজেলার ১১৮০টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২৩৫ ভোটকেন্দ্রের হিসাব পেয়েছি জানিয়ে সিইসি বলেন, “সেদিক থেকে উপস্থিতির হার হচ্ছে ৪৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। নিশ্চিত করা বলা যাবে না। এটা কমতে পারে, বাড়তে পারে।”
রবিবার ছয় জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দুই তিনজন ছিল পোলিং কর্মকর্তা। দুজন পোলিং কর্মকর্তাকে অপকর্মের জন্য আটক করা হয়েছে। কমিশন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। চারজন আহত হয়েছে। তারমধ্যে দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। দা দিয়ে কোপানোর ঘটনা ঘটেছে।”
উপজেলায় ভোটার উপস্থিতি কম- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিইসি বলেন, “বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক অংশগ্রহণ হয়নি। রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক অংশগ্রহণ হলে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা বেড়ে যায়। স্বাভাবিকভাবে এটি একটি কারণ হতে পারে।”
ভোটার উপস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির বিষয়টা চট করে বলতে পারবেন না।
“ভোটারের সংখ্যা ৬০ শতাংশ ৭০ শতাংশ হলেও আমরাও আপনাদের মতো সন্তষ্ট হতাম”, বলেন কাজী হাবিউল আউয়াল।
মানুষ আগামীতে আরও বেশি সচেতন হবে- প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, “স্বশাসনের বিষয়টা জনগণকে বোঝাতে হবে। তারাও স্বশাসনের গণতান্ত্রিক চেতনা উপলব্ধি করে ভোটমুখী হবে।”