খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) এক কর্মীকে শনিবার ভোরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
এ নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি জুলাই মাসের এ পর্যন্ত রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামে পাহাড়ি সংগঠনটির ১৪ জন নেতা-কর্মী ও সমর্থক দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছে বলছে ইউপিডিএফ।
শনিবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার হাঙেরিমা ছড়া গ্রামে নিহত ইউপিডিএফ কর্মীর নাম জুনেল চাকমা (৩১)।
তিনি দীঘিনালা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তপ্ত কাঞ্চন চাকমার ছেলে। দীঘিনালার কবাখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন জুনেল।
ইউপিডিএফ কর্মী জুনেল চাকমাকে হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই ঘটনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে (এম এন লারমা) দায়ী করেন ইউপিডিএফের মুখপাত্র ও খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।
তবে জুনেল চাকমাকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জনসংহতি সমিতির এই অংশের কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক জুপিটার চাকমা।
শনিবার দুপুরে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফ নেতা অংগ্য মারমা অভিযোগ করেন, “শনিবার ভোর ৪টার দিকে সংস্কারবাদী সংগঠন জেএসএসের ৭/৮ জনের একটি দল হাঙেরিমা ছড়া গ্রামে গিয়ে জুনেল চাকমাকে হত্যা করে। সেসময় তিনি সাংগঠনিক কাজ শেষে ললিত চাকমা নামের একজনের বাড়িতে ছিলেন।
”জুনেলকে হত্যার পর দুর্বৃত্তরা দীঘিনালা সদরের দিকে চলে যায়। তাদের মধ্যে ‘সন্ত্রাসী’ ক্লিনটন চাকমা, চিক্কো চাকমা ও শান্তি চাকমাকে শনাক্ত করেছে গ্রামবাসী।”
জুনেল চাকমা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান অংগ্য মারমা।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূরুল হক বলেন, “প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউপিডিএফ নেতাকে হত্যার খবর পেয়েছি।”
ইউপিডিএফের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের অনিলপাড়ায় গুলি করে ইউপিডিএফের চার নেতাকে হত্যা করা হয়। পানছড়ির চার খুনের দেড় মাসের মাথায় এ বছরের ২৪ জানুয়ারি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় আরও দুজনকে হত্যা করা হয়।
এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় দুজন, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে একই উপজেলায় আরও একজন এবং ১৮ মে রাঙ্গামাটিতে দুজনকে হত্যা করা হয়।
গত ১ জুন খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা লাগোয়া চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং ৮ জুন খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় আরও একজন খুন হন।