দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার জাগরণ দেখছে বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। যার মধ্য দিয়ে বিনোদন দুনিয়ার প্রভাবশালী এই ইন্ডাস্ট্রি ক্রমশ ধাবিত হচ্ছে এক নতুন ভাঙা-গড়ার দিকে। ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে ভারতীয় সিনেমার চিরচেনা দৃশ্যপট।
অনেকেই মনে করেন দক্ষিণ ভারতীয় নির্মাতাদের সৃজনশীলতার ভাষাটি একেবারে স্বতন্ত্র। গল্প বলার নিজস্ব ভঙ্গি, চরিত্রের বিন্যাস এবং দুর্দান্ত,অদ্ভূত সব দৃশ্যায়নের কারণে দর্শকদের এক ঘোরের মধ্যে ধরে রাখে দক্ষিণের সিনেমা। দক্ষিণের ‘বাহুবলী’ এবং ‘কেজিএফ’ এর মতো ব্লকবাস্টার হিট সিনেমা পালটে দিয়েছে ভারতের বাণিজ্যিক ধারার সিনেমার সংজ্ঞা। বাণিজ্যিক সিনেমার কাছে ভারতীয় দর্শকের প্রত্যাশাই পালটে দিয়েছে এই সিনেমাগুলো। ফলে নির্মাতাদের ভাবতে হচ্ছে নতুন করে।
প্রযুক্তির অগ্রগতিও দক্ষিণী সিনেমার জাগরণে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। যে অগ্রগতি তামিল, তেলেগু এবং মালায়াম ইন্ডাস্ট্রিকে নিয়ে এসেছে বলিউডের কাতারে। আর তাই দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র অন্তত প্রোডাকশনের মান বিবেচনায় শেয়ানে শেয়ানে খেলছে বলিউডের সঙ্গে। এতে করে মূলধারার সঙ্গে আঞ্চলিক এই ধারার পার্থক্য ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে এসেছে।
আজকাল বলিউড এবং দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে সিনেমা। এভাবে এই দুই ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে গড়ে উঠেছে পারষ্পারিক আদান-প্রদানের সম্পর্ক। এতে লাভবান হচ্ছে উভয়েই। এই প্রক্রিয়ায় দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেতারা চলে যাচ্ছেন বিশ্ব কাতারে। বলিউড তারকাদের মতোই তাদেরও অনেকেই হয়ে উঠছেন বিশ্ব তারকা।
সম্প্রতি দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা যেমন, ‘কানতারা’, ‘বিক্রম’, ‘আরআরআর’ এবং ‘মহারাজা’র সাফল্য অন্তত তাই প্রমাণ করে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় দর্শকদের বদৌলতে এই সিনেমাগুলোর গান এবং নাচের ব্র্যান্ডিং হয়েছে বিশ্বব্যাপী।
দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার আরেকটি বড় দিক হলো এর বৈচিত্র্য। কারও কারও মতে, বৈচিত্র্য আর সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের এক বর্ণিল উদযাপন হলো দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র। যার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে গড়ে তোলার গুরত্বকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলছে চলচ্চিত্রের এই ধারা।
ভারতের ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানেও দক্ষিণের জয়জয়কার। এতে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতে কন্নড় অভিনেতা ঋষভ শেঠি আবারও তার অতুলনীয় প্রতিভা প্রমাণ করেছেন। ‘কানতারা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার জিতেছেন এই অভিনেতা। নিত্যা মেনেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন তামিল সিনেমা ‘তিরুচিত্রম্ববলম’ সিনেমার জন্য।
মিডিয়ামে প্রকাশিত ‘The Rise of South Indian Films in Bollywood’ থেকে অনুদিত ও ঈষৎ পরিবর্তিত