ওয়াশিংটন ডিসিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর এক সদস্য। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন।
রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ওয়াশিংটন ডিসির দমকল বাহিনীর বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, বিমানবাহিনীর ওই সদস্যদের গায়ে জ্বলতে থাকা আগুন নেভান যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। এরপর তারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর এক মুখপাত্রের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানায়, ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে নিজের শরীরে আগুন লাগানো ওই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর সদস্য।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি ঘটনাটির তদন্তে নেমেছে ওয়াশিংটন পুলিশ দপ্তর। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, এক ব্যক্তি দুপুর ১টার দিকে শহরের ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভ, এনডব্লিউয়ের ৩৫০০ ব্লকে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাকে সহযোগিতা করতে পুলিশ সদস্যদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গুরুতর অবস্থায়’ একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঘটনাটির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে আগুনে পুড়তে পুড়তে এক ব্যক্তিকে ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’ বলে চিৎকার করতে দেখা যায়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাস্থলে একটি গাড়িকে সন্দেহজনকভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এটির সঙ্গে বিমানবাহিনীর ওই সদস্যের কোনও সংযোগ আছে কি না এবং তাতে কোনও বোমা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলকে সেখানে পাঠানো হয়।
গাড়িটিতে বিপজ্জনক কিছু নেই বলে পরে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ইসরায়েলি দূতাবাসের এক মুখপাত্র নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, ঘটনায় দূতাবাসের কোনও সদস্য আহত হননি।
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ করার ঘটনা এই প্রথম নয়। গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটির জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ইসরায়েলি কনস্যুলেটের সামনে এক প্রতিবাদকারী দেহে আগুন ধরিয়ে নিজেকে দগ্ধ করেছিলেন।
সে সময় পুলিশ বলেছিল, ওই প্রতিবাদকারী পেট্রোল ব্যবহার করেছিলেন। ফিলিস্তিনের একটি পতাকা ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়।
৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায়। এতে এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। একই সঙ্গে সেদিন তারা ২৫৩ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে।
এর জবাবে ওই দিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনও চলছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি।
গাজায় পাঁচ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিবাদে খোদ দেশটির নাগরিকরা বিক্ষোভ করছেন।