Beta
বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫

জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্টকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়া।
ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়া।
[publishpress_authors_box]

দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এর ফলে আফ্রিকার দেশটির ওই নেতাদের যুক্তরাষ্ট্রে রাখা সম্পদ জব্দ হবে এবং সেখানে তারা অনানুষ্ঠানিক ভ্রমণে যেতে পারবেন না।

এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, “বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করছি। সুশীল সমাজকে লক্ষ্য করে নেওয়া দমনমূলক পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর কড়া বিধিনিষেধ মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা হরণ করছে। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত লাভের জন্য সরকারি নেতাসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জনগণের সম্পদ লুট করছে।

“প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড ঘুষ, চোরাচালান ও অর্থপাচারের আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রকে সহায়তা করছে। তারা চক্রটিকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখছে। ফলে জিম্বাবুয়েসহ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল ও বিশ্বের অন্য প্রান্তের মানুষ আরও দরিদ্র ও নিঃস্ব হচ্ছে।” 

জিম্বাবুয়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সম্প্রতি বলেন, “একের পর এক অপহরণ, শারীরিক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আফ্রিকার ওই দেশের জনগণ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।”

নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শোষণমূলক ব্যবস্থা জারি রাখার জন্য দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনতে পুনরায় জোর দেওয়া হচ্ছে।

জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট নানগাগওয়া ছাড়া আরও ১০ ব্যক্তি ও তিনটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হোয়াইট হাউসের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে।

এদের মধ্যে আছেন দেশটির ফার্স্ট লেডি অক্সিলিয়া নানগাগওয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট কনস্টানটিনো চিওয়েঙ্গা ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অপ্পাহ মুচিনগুরি।

নিষেধাজ্ঞার তালিকায় জিম্বাবুয়ের জাতীয় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স অর্গানাইজেশনের (সিআইও) সদস্যসহ জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাও আছেন।

রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিতে সহযোগিতার অভিযোগে জিম্বাবুয়ের ব্যবসায়ী ও তাদের প্রতিষ্ঠানও হোয়াইট হাউসের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছেন। এরা হলেন দেশটির প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা কুদাকওয়াশে তাগওয়ারেই, তার স্ত্রী ও তাদের দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

ফার্স্ট লেডি অক্সিলিয়া নানগাগওয়ার সঙ্গে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়া।

বিবিসি জানিয়েছে, এর আগেও জিম্বাবুয়ের কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এবারের তালিকায় তাদের নাম নেই। তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘটনাকে ‘প্রেসিডেন্ট নানগাগওয়ার পররাষ্ট্রনীতির প্রতি বড় ধরনের সমর্থন’ হিসেবে দেখছেন জিম্বাবুয়ে সরকারের মুখপাত্র নিক নানগাগওয়া। তবে একই সঙ্গে নতুন নিষেধাজ্ঞাকে ‘নীতিবিরুদ্ধ’ বলে মনে করছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট নানগাগওয়ার দল জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন-পেট্রিয়োটিক ফ্রন্টের মুখপাত্র ফারাই মুরোইওয়া মারাপিরা সোশাল মিডিয়া এক্সে লেখেন, “আমাদের প্রেসিডেন্টের নীতি হলো সবার বন্ধু হওয়া, কারোর শত্রু না হওয়া। সবার জন্য দরজা খোলা রাখার পক্ষপাতী তিনি। তার এসব নীতি তেতো-মিষ্টি ফল বয়ে আনছে।”      

এক্সে তিনি আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট, ফার্স্ট লেডি ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকলে জিম্বাবুয়ে এই অবৈধ পদক্ষেপের ভারে ভারাক্রান্ত হবে।”

নব্বইয়ের দশকে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে জিম্বাবুয়ে। সে সময় দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবেসহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহতের অভিযোগ এনেছিল ওয়াশিংটন প্রশাসন।

জিম্বাবুয়ে কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশেরও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে।    

গত বছর দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন নানগাগওয়া। আগের মেয়াদে তিনি দেশের উন্নয়নের পথে বাধা হিসেবে শুল্ককে দায়ী করেছিলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত